রোজদিন ডেস্ক :- বাংলাদেশের উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় এবার সেই দেশে শান্তিবাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রক কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা সংসদে বিবৃতি আকারে জানানোর দাবি জানান তিনি। এছাড়াও, এদিন তাঁর প্রস্তাব জানান, বাংলাদেশের বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র রাষ্ট্রসংঘের দ্বারস্থ হোক।
সোমবার বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনে বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত, সেই কারণে সেখানকার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি কোনও হস্তক্ষেপ করবেন না ৷ তবে সেখানে এদেশের নাগরিকদের যে আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধব রয়েছেন, তাঁদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি ৷
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের পরিবার-পরিজনের উপর যাতে কোনও অত্যাচার না হয়, তা দেখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমরা আবেদন জানাচ্ছি। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের সঙ্গে কথা বলুন। প্রধানমন্ত্রীর অসুবিধা থাকলে বিদেশমন্ত্রক কথা বলুন। যখন সংসদ চলছে, তখন পার্লামেন্টে বিবৃতি দিয়ে দেশবাসীকে জানান বিদেশমন্ত্রী, যে তাঁরা কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এরকম ভাবে যদি ঘটনা ঘটতে থাকে আমরা আমাদের লোকেদের ফিরিয়ে আনতে চাই। এর জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করুক। তাঁরা ফেরত এলে এখানে কোনও খাবারের অসুবিধা হবে না। আমরা যদি আধ-খানা রুটি খাই, তাঁদেরও আধখানা রুটি দিতে পারি। কিন্তু কোনও ভারতীয়র উপর অত্যাচার হোক, সেটা আমরা নিশ্চয়ই চাই না।”
এদিন বিধানসভা থেকে বাংলাদেশের বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের দ্বারস্থ হওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে আর্জিও জানিয়েছেন মমতা। এদিন তিনি বলেন, “ভারত সরকার বিষয়টা রাষ্ট্রসংঘের কাছে নিয়ে যাক। যাতে তাঁরা বাংলাদেশে শান্তিবাহিনী পাঠাতে পারে এবং আমাদের লোকেদের উদ্ধার করতে পারে। এটা আমার অনুরোধ থাকল।”
বাংলাদেশে ভারতীয় পতাকাকে লাগাতার অসম্মান করা হচ্ছে। সেই সব ছবি গত কয়েকদিন ধরে ভেসে বেড়াচ্ছে সমাজমাধ্যমে। এ ব্যাপারে এপার বাংলায় বিপুল সংখ্যক মানুষের মনে ক্ষোভ ও রাগ তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘এভাবে জাতীয় পতাকার অমর্যাদা করা ঠিক হচ্ছে না। আমি ইস্কনের সঙ্গেও কথা বলেছি।’
এদিন জানান, পশ্চিমবঙ্গের ৭৯ জন মৎস্যজীবী বাংলাদেশের জেলে আটকে রয়েছে। সরকার ট্র্যাক করেছে। আইনজীবী দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে তাদের। তাঁর কথায়, ‘আমরা কেন্দ্রকে বলেছি। কিন্তু আজও তাদের মুক্তি দেওয়া হয়নি। অথচ এখানে বাংলাদেশের ট্রলার ডুবে গিয়েছিল। আমরা তাদের উদ্ধার করে দেশে পাঠিয়েছি। কিন্তু আমাদের লোককে ওরা ছাড়েনি। কেন্দ্রও ব্যাপারটা দেখুক।’
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর গলায় গত ১০ দিন ধরে বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার সম্পূর্ণ চুপ থাকার কারণে অভিযোগের সুরও শোনা যায়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের বক্তব্য সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বিষয়টি সংসদে আলোচনার জন্য তোলা হবে বলে পরে বিধানসভার লবিতে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
Be the first to comment