বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ভারত, সংসদে বললেন বিদেশমন্ত্রী

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক :- বিগত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা বেড়েছে। এই আবহে সম্প্রতি ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি ঢাকায় গিয়ে সচিব পর্যায়ের বৈঠক করে এসেছেন। আর শুক্রবার বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে লোকসভায় প্রশ্ন করেন হায়দরাবাদের সাংসদ তথা এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। আর তাঁর প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ নিয়ে ভারত সরকারের উদ্বেগের বিষয়টি তুলে ধরেন জয়শংকর। বিদেশ মন্ত্রী জানালেন, পড়শি দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ভারত। নিজের স্বার্থেই হিন্দুদের নিরাপত্তা সুচিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশকে। হিন্দু নির্যাতন নিয়ে বিদেশ সচিব বার্তা দেওয়ার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর থেকে হিন্দুদের উপর অত্যাচার কোনও কিছুই থামেনি।

সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, আজ শুক্রবার সংসদে বাংলাদেশ নিয়ে বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরকে প্রশ্ন করেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। তিনি জানতে চান, বাংলাদেশের উন্নয়ন খাতে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ধার্য করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে হিন্দু ও মন্দিরগুলোর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সরকার কী কী পদক্ষেপ করছে? এর উত্তরে জয়শংকর বলেন, “বাংলাদেশ আমাদের ভাবাচ্ছে। সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কয়েকদিন আগে বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি ঢাকা সফরে গিয়েছিলেন। আমরা আশা করেছিলাম, বাংলাদেশ নিজের স্বার্থেই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে। কিন্তু এখনও সংখ্যালঘুদের উপর একাধিক হামলার ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে।”
আজ বাংলাদেশ নিয়ে লোকসভায় এস জয়শংকর বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে যা হচ্ছে, তা আমাদের কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের ওপর হামলার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। আমরা আমাদের উদ্বেগ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। সম্প্রতি ভারতের বিদেশ সচিব ঢাকা সফর করেন। তাঁর বৈঠকে এই বিষয়টি উঠে এসেছে। আমরা আশা করছি যে বাংলাদেশ তাদের নিজস্ব স্বার্থেই ব্যবস্থা নেবে যাতে সেখানকার সংখ্যালঘুরা নিরাপদে থাকে।’
উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠে আসছে। হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই মন্দির থেকে শুরু করে হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চলেছে। এরই মাঝে চট্টগ্রামে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংখ্যালঘু অত্যাচারে সেখানে অভিযুক্ত খোদ সেনা। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেফতারি ঘিরে আরও উত্তাল হয় পরিস্থিতি। এই আবহে ভারতের রাস্তাতেও লোক নেমেছে। বাংলাদেশি মৌলবাদে বিরুদ্ধে স্লোগান উঠেছে এখানে। ভারত সরকারও একাধিক বিবৃতি প্রকাশ করে ওপারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এদিকে শুধু বাংলাদেশ নয়, মায়ানমারের অস্থির পরিস্থিতি এবং নেপালের নোটে ভারতের অংশকে নিজেদের অংশ হিসেবে দেখানোর ইস্যুতেও ওয়াইসি প্রশ্ন করেন আজ। এই আবহে মায়ানমার নিয়ে জয়শংকর বলেন, ‘মায়ানমারের খুব অস্থির অবস্থার কারণে, আমাদের উন্মুক্ত শাসন নীতি পর্যালোচনা করতে হয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে এই নীতি ছিল। কিন্তু সীমান্তে বসবাসকারীদের প্রয়োজনের প্রতিও সংবেদনশীল থাকতে হবে আমাদের। তাই এই নিয়ে এখনও আমরা কাজ করে চলেছি।’
আর নেপালের নোট ইস্যুতে বিদেশমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, ভারত নিজেদের অবস্থানেই অনড় আছে। তিনি বলেন, ‘সীমান্ত নিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলাম। তাই আমাদের প্রতিবেশীরা কিছু করলে তাতে যে আমাদের অবস্থান বদলাবে, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। আমার এই অবস্থানের সঙ্গে গোটা লোকসভা সহমত হবে বলেই আমি মনে করি।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*