‘সব দায় সিবিআইকে নিতে হবে’, সন্দীপ – অভিজিতের জামিনের পরই বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক জুনিয়র চিকিৎসকদের

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক :-  ৯০ দিন পেরিয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা না দিতে পারায় শুক্রবার জামিন পেয়ে যায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। এদিন এই রায় ঘোষণার পরই সিবিআইকে কাঠগড়ায় তুলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।

গত ৯ আগস্ট রাতে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় শিউরে ওঠে গোটা দেশ, বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর কোনায় কোনায়। তদন্তে রাজ্য পুলিশের গাফিলতি ধরা পড়ায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু সেই সিবিআইয়ের তদন্তেও বিশেষ কিছুই অগ্রগতি হল না। এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ সঞ্জয় রায়কে মূল অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার করেছিল সেই সঞ্জয়ের বিরুদ্ধেই চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আরজিকর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে সিবিআই গ্রেপ্তার করলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ জোগার করতে না পারায় ৯০ দিনের মধ্যে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিতে পারল না। ফলে জামিন পেয়ে গেলে দুজনেই। তবে সন্দীপ ঘোষ যেহেতু দুর্নীতি মামলাতেও অভিযুক্ত, তাই তিনি এখন জেলে থাকবেন। তবে জেল মুক্তি ঘটবে টালা থানার তৎকালীন ওসির।
প্রথম থেকেই দোষীদের শাস্তির দাবিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছেন রাজ্যের জুনিয়ার ডাক্তাররা। এদিন তাঁরা সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো বলেন, ‘সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। ৯০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও চার্জশিট দিতে পারেনি সিবিআই। তাই জামিন পেয়ে গেল ২ জন। সিবিআই তদন্ত মানেই বিচার পেয়ে গিয়েছি তা নয়। ব্যর্থতার দায় সিবিআইকে নিতে হবে। কেন তারা ধর্ষণ ও খুন মামলায় চার্জশিট দিতে পারল না, তার জবাব দিতে হবে। সাধারণ মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করেছে সিবিআই।’
এর প্রেক্ষিতে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়ার জন্য নাগরিক সমাজের কাছে আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা। জানা গেছে, আদালতের এই রায়ের পরই অতি দ্রুত জিবি মিটিংয়ে বসতে চলেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। শনিবারের মধ্যে তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ জানাবেন তাঁরা। জুনিয়র চিকিৎসক আসফাকুল্লা নাইয়া-ও সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘শুধু আমাদের নয়, ব্যর্থতার জবাব অভয়ার দিদি, তাঁর বাবা-মা, গোটা রাজ্যবাসীকে দিতে হবে। সিবিআইয়ের ঢিলেমির তীব্র বিরোধিতা করি।’ নাগরিক সমাজের কাছে জুনিয়ার চিকিৎসকদের অনুরোধ, কোনও মতেই রাজপথ ছাড়বেন না।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় ডাক্তারদের সাংবাদিক বৈঠক থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার শনিবার থেকেই অভয়ার সুবিচারের দাবিতে ফের আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়তে রাস্তায় নামছেন তাঁরা। এর ফলে চিকিৎসা পরিষেবা ফের ব্যাহত হয় কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*