রোজদিন ডেস্ক :- বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চলছিল এসএসসি ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি। শেষ হতে বিকেল হলেও এখনও শীর্ষ আদালতে ঝুলে রইল এই মামলা। পাশাপাশি চাকরি বাতিলের মামলায় যোগ্য-অযোগ্য বাছাইয়ের মাপকাঠি হিসেবে যে ওএমআর শিটের কথা বলা হচ্ছে, তার সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘ওএমআর শিটের ‘মিরর ইমেজ’ও সংরক্ষণ করে রাখেনি কেউ। ফলে যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের বাছাইয়ের ভরসা বলতে মেটা ডেটা!’ সেই মেটা ডেটা খুঁজে বের করতে না পারলে যোগ্য এবং অযোগ্য তালিকা বাছাই করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে গত ২২ এপ্রিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট পুরো প্যানেল বাতিলের যে নির্দেশ দিয়েছিল, তাই বহাল রাখা হতে পারে বলে এদিন ইঙ্গিত দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার এজলাসে চলছে চাকরি বাতিল মামলার শুনানি। ওই মামলায় এদিন দিনভর সব পক্ষের বক্তব্য শোনা হয়। এরপর আদালতের পর্যবেক্ষণ, যোগ্য-অযোগ্য বাছাই না করা গেলে পুরো প্যানেলটাই বাতিল করা হতে পারে। আগামী ৭ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
এদিন মামলার শুনানির শুরুতেই সুপারনিউমেরি পোস্ট বা অতিরিক্ত পদের বিষয় নিয়ে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার। প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ছিল, অযোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করে বের না করে সুপারনিউমেরি পোস্ট তৈরি করা হল। এদিকে এসএসসি-র ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আদালতে বলা হয়েছে, কোনও টেন্ডার ছাড়াই নাইসাকে দায়িত্ব দিয়েছিল এসএসসি। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বক্তব্য, একটা জিনিস পরিষ্কার, আসল এবং স্ক্যান ওএমআর শিট এক নয়। অনেককিছু গোপন করা হয়েছে। এসএসসি-র বিরুদ্ধে আবার ওএমআর শিটের ‘মিরর ইমেজ’ সংরক্ষণ না করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। তারা দায়িত্ব দিয়েছিল নাইসাকে। তারাও না করে স্ক্যানটেককে তথ্য দেয়। তারাও সংরক্ষণ করেনি, শুধু স্ক্যান করে ছেড়েছিল। এই প্রেক্ষিতে এসএসসি-র আইনজীবী বলেন, ধাপে ধাপে পরীক্ষা হয়েছে। তাই সব ওএমআর সিট সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব ছিল না। ২০২১ সাল পর্যন্ত কোনও অনিয়মের অভিযোগ আসেওনি। তবে ২৬ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দেওয়ার পর কিছু নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে বলে কার্যত স্বীকার করে নেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টে এও উঠে এসেছে, ওএমআর সিটের স্ক্যান কপির সঙ্গে এসএসসির তথ্য আলাদা। এমনকি স্ক্যানিংয়েও অনিয়ম করা হয়েছে। ‘মিরর ইমেজ’ যেহেতু এসএসসি রাখেনি, শুধু স্ক্যান কপি রয়েছে তাই যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করতে হলে মেটা ডেটা খুঁজে পাওয়াটা জরুরি। এখন সবাই তাকিয়ে পরবর্তী শুনানির দিকে।
Be the first to comment