‘গুড মর্নিং’, ‘গুড নাইট’ মেসেজে ভরে যাচ্ছে দলের হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপ, কড়া বার্তা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি, কলকাতা :- ‘গুড মর্নিং’, ‘গুড নাইট’। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৈরি দলের হোয়াট্‌স অ্যাপ গ্রুপ ভরে উঠছিল এই সব মেসেজে। বিষয়টির ওপর বেশ কয়েকদিন ধরেই নজর রাখছিল দলের হাই কমান্ড। অবশেষে কড়া বার্তা দিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিধায়কদের কড়া বার্তা পাঠানো হয়েছে- ওই জাতীয় মেসেজ-ছবি কোনওভাবেই গ্রুপে পোস্ট করা যাবে না। কোনও বিধায়ক নিজের খুশি মতো ওই গ্রুপে পোস্ট করবেন না। দলীয় নির্দেশ দেওয়ার জন্য গ্রুপটি তৈরি হয়েছে। অন্য কোনও কাজে এটি ব্যবহার করা যাবে না।

গত ২ ডিসেম্বর বিধানসভার নৌসর আলি কক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল পরিষদীয় দলের জন্য একটি হোয়াট্‌স অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করতে নির্দেশ দেন। গ্রুপের নাম দেওয়া হয় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি মেম্বার্স’। সূত্রের খবর, গ্রুপের অ্যাডমিন হয়েছেন অরুপ বিশ্বাস। ঠিক হয়, দলের বিধায়কদের ব্যাপারে এই গ্রুপেই সিদ্ধান্ত জানাবে তৃণমূলের পরিষদীয় দল। এই গ্রুপেই বিধায়করাও নিজেদের কথা জানাতে পারবেন।
তৃণমূলের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে বিধায়কদের কার্যকলাপ মনিটর করা হবে। সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া এবং তৃণমূলের অন্দরের শৃঙ্খলা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, গ্রুপটির মাধ্যমে জানা যাবে কোন বিধায়ক কখন কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন। ফলে দলের মধ্যে কোনও ধরনের অব্যবস্থাপনা হওয়ার সম্ভাবনা এড়ানো যাবে। ওই দিনই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস গ্রুপ তৈরি করে বিধায়কদের সংযুক্ত করার কাজ শুরু করেন।
দ্রুত গ্রুপ তৈরি হয়ে গেলেও গোল বাধে অন্য জায়গায়। কয়েকদিন যেতেই দেখা যায়, দলীয় নির্দেশে উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরি গ্রুপে বিধায়করা রাজনৈতিক কর্মসূচির ছবি এবং বক্তব্য পোস্ট করতে শুরু করেছেন। সকলের লক্ষ্য যেনো একটাই, যেন তেন প্রকারে দলের সুপ্রিমোর কাছে নজরে থাকা। শুধু রাজনৈতিক পোস্টই নয়, কেউ কেউ নিয়মিত সকালে এবং রাত্রে ‘গুড মর্নিং’ এবং ‘গুড নাইট’-এর ছবিও পোস্ট করতে শুরু করেন।
এরপরই নড়েচড়ে বসে তৃণমূল হাইকমান্ড। গ্রুপের সদস্য তথা পরিষদীয় দলের শীর্ষনেতারা বিধায়কদের সাফ জানিয়ে দেন, দলের সর্বোচ্চ নেত্রীর নির্দেশে গ্রুপটি তৈরি করা হয়েছে। নিজের খুশি মতো ওই গ্রুপে পোস্ট করা যাবে না। সম্মিলিত ভাবে গ্রুপটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন – অরূপ, পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সূত্রের খবর, তিনজনেই বিধায়কের কার্যকলাপে রীতিমতো অসন্তুষ্ট হয়ে কড়া নির্দেশ দেন।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের ওই হোয়াট্‌স অ্যাপ গ্রুপে রয়েছেন তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত ২১৬ জন বিধায়ক। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করা ৬ বিধায়কও রয়েছেন গ্রুপে। তৃণমূল পরিষদীয় দলের এক প্রবীণ সদস্যের কথায়, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যে হোয়াট্‌স অ্যাপ তৈরি হয়েছে, সেখানে নিজের ইচ্ছা মতো পোস্ট করা যায় নাকি! বিধায়কদের কখনওই সেটা করা উচিত হয়নি। সেই কারণেই কড়া ভাষায় বার্তা দেওয়া হয়েছে তাঁদের।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*