১৯০৬ সাল থেকে শুরু করে শতাব্দী প্রাচীন শতাধিক ‘ভিনটেজ ও ক্লাসিক কার’ প্রদর্শনী হয়ে গেলো শহরে

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা :- রবিবাসরীয় সকালে কলকাতার রাজপথে দেখা গেলো ‘বাবুয়ানা’। বছরের শুরুতে প্রতি বছরের মতো এবছরও শতাব্দী প্রাচীন গাড়িগুলি দেখতে মেতে উঠলো শহরবাসী।

১৯ জানুয়ারি ‘দ্য স্টেটসম্যান’-এর আয়োজনে রয়েল ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাবের (আরসিটিসি) মাঠে প্রায় দুশোটি ভিন্টেজ গাড়ির প্রদর্শনী হয়ে গেলো। এবছর ৫৪ তম বর্ষে পদার্পণ করল এই ‘ভিন্টেজ কার’ র‍্যালির। এদিনের এই প্রদর্শনীতে ১৯০৬ সালের গাড়ি থেকে শুরু করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বোমা ফেলে চিরতরে বন্ধ হয়ে যাওয়া মার্সিডিজ কোম্পানির ১৯৫২ সালের তৈরি হওয়া শেষ গাড়িটিও ছিলো আজকরে এই প্রদর্শনীতে।
অতীতকে সাক্ষী রেখে রেনল্ট, ফ্রেরেস, স্টোয়ার, স্টুডিবেকার, রোলস রয়েস, বিভিন্ন মডেলের অস্টিন, টর্পেডো, ওলসলি, মার্সিডিজ বেঞ্জ, ল্যান্ড রোভার মোটর সাইকেল, প্যান্থার স্লোপ, ভেসপার মতো শতাধিক ভিনটেজ ও ক্লাসিক গাড়িগুলি দেখা যায় আজকের এই প্রদর্শনীতে। বলাই বাহুল্য এই গাড়িগুলির প্রত্যেকটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক একটি রূপকথা।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৮ সালে এই রূপকথার গল্প বলা শুরু হয়েছিল তৎকালীন ‘দ্য স্টেটসম্যান’ পত্রিকার সম্পাদক ডেসমন্ড ডয়েগের উদ্যোগে। এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন ফোর্ট উইলিয়ামের সেনা আধিকারিকরা। যুদ্ধ, প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং করোনার কারণে কয়েক বছর এই কার র‍্যালি বন্ধ থাকলেও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। আজও পরম্পরা মেনেই হচ্ছে এই প্রদর্শনী। এদিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী তথা সাংসদ জুন মালিয়া, উপস্থিত ছিলেন সিএবির সভাপতি স্নেহাশীষ গাঙ্গুলী-সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ।

১৯০৬ সালের কাঠের চাকার গাড়ি 

এদিন এখানে দেখা যায় একটি হুডখোলা সবুজ কালো গাড়ি যার বয়স ১১০ বছর। গাড়িটির বর্তমান মালিক আনন্দ চৌধুরীর জানান, ‘পশ্চিম মেদিনীপুরের মলিঘাট স্টেটের জমিদার ঈশ্বরচন্দ্র চৌধরী গাড়ি কিনতে জার্মানিতে যান ১৯০৮ সালে। মেদিনীপুরের জলকাদা রাস্তাতে চলতে পারে এমন গাড়ি খুঁজতেই তিনি হাজির হলেন স্টোয়ার কোম্পানিতে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কিছু আগে ১৯১৩ সালে অক্টোবর মাসে কলকাতা বন্দরে চারটে কাঠের বাক্সে সেই স্টোয়ার গাড়িটিকে আনা হয়। গাড়িটিকে অ্যাসেম্বল করে দেওয়ার জন্য সঙ্গে আসেন দুজন জার্মান মেকানিকও। গাড়িটি অ্যাসেম্বল করে দেওয়ার পর সেই গাড়ি চালিয়ে গাড়ির মালিক ঈশ্বরচন্দ্র চৌধুরী পৌঁছে যান মলি ঘাটে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় বহু বিপ্লবীর পদস্পর্শে এই গাড়িটি ধন্য হয়েছে। চার সিলিন্ডারের এই গাড়িটি স্টার্ট নেয় ম্যাগনেটের মাধ্যমে। হেডলাইট অ্যাসিটিলিন গ্যাসে। বর্তমানে কাঠের চাকার পরিবর্তে রাবার হুইল লাগানো হয়েছে।’

ঈশ্বরচন্দ্র চৌধুরী স্টোয়ার কোম্পানির এই গাড়িটি কিনতে ১৯০৮ সালে জার্মানি যান

এরকমই সব রূপকথার গল্প জড়িয়ে রইলো এই ‘দ্য স্টেটসম্যান’-এর আয়োজনে এই ‘ভিনটেজ ও ক্লাসিক’ গাড়িগুলিকে ঘিরে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*