রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা :- আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সঞ্জয় রায় যে দোষী, তা জানা গিয়েছে শনিবার। আজ, সোমবার ছিল সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণার দিন। বেলা সাড়ে ১২টার কিছু পরে শিয়ালদহ আদালতের ২১০ নম্বর ঘরে পৌঁছান বিচারক। তার কিছুক্ষণ পরই কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয়কে কাঁদতে দেখা যায়।
শনিবার আদালত যখন এই মামলার রায়দান করে, সেই সময় সঞ্জয় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছিল। বিচারককে বলতে চেয়েছিল যে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। সেদিনই বিচারক সঞ্জয়কে জানিয়েছিলেন যে সোমবার তার সবকথা শুনবেন। সেই মোতাবেক এদিন সঞ্জয়ের কথা শোনেন বিচারক।
তিনি শুরুতেই রায়ের কথা আরও একবার উল্লেখ করেন। সঞ্জয় রায় যে দোষী, সেটাও জানান আরও একবার। তার পর সঞ্জয়কে প্রশ্ন করেন, ‘‘এই বিষয়ে আপনার কী বক্তব্য আছে?’’ উত্তরে সঞ্জয় বিচারককে বলে, আমি কোনোটাই করিনি। আমায় ফাঁসানো হয়েছে। আমায় অত্যাচার করা হয়েছে। যেখানে ইচ্ছে সই করিয়েছে।’’
এদিন সিবিআইয়ের ঘাড়েও দোষ চাপাতে দেখা যায় সঞ্জয়কে। সে বলে, ‘‘আমাকে সিবিআই নিয়ে গিয়ে কোনও মেডিক্যাল পরীক্ষা করায়নি। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি এই অপরাধ করিনি। আমি শুধু কথা শুনেছি।” যদিও বিচারক তাকে জানিয়েছেন যে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ যা আদালতে জমা পড়েছিল, তার ভিত্তিতেই তিনি এই রায় দিয়েছেন। তবে সঞ্জয় জানায় যে সে দোষী নয়। সে-ও এই মামলায় ‘ভিকটিম’। তাই সে বিচারকের কাছে বলে, ‘‘মৃত্যুদণ্ড ছাড়া আর কিছু (শাস্তি) দিন।’’
এর পর বিচারক সঞ্জয়ের কাছে জানতে চান, ‘‘বাড়িতে কে আছেন?’’ সঞ্জয় শুধু বলে, ‘‘মা।’’ বিচারক জানতে চান, ‘‘কেউ যোগাযোগ করেন?’’ সঞ্জয় বলে, ‘‘না।’’ তবে মায়ের কথা উল্লেখ করে জামিন দেওয়ার আর্জি জানাতে চায় সঞ্জয়কে। তবে বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি কিছু বলতে চান?’’ আর উত্তর দেয়নি সঞ্জয় চুপ করে থাকতে দেখা যায় তাকে।
বিচারক বলেন, ‘‘আমি আপনাকে সময় দিয়েছি। কী হয়েছে আপনার থেকে ভালো কেউ জানে না। যা যা প্রমাণ এসেছে, তার উপর বিচার হবে। আপনাকে তিনঘণ্টা সময় দিয়েছি। আমি নিজে আপনার সঙ্গে কথা বলছি। সব শুনে আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করেছি।’’
সিবিআইয়ের তরফে সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ শাস্তির পক্ষেই সওয়াল করা হয়। সিবিআইয়ের তরফে আদালতে জানানো হয় যে এটা এমন ঘটনা, যা সারা বিশ্বে প্রভাব পড়েছে। হাসপাতালে মানুষ চিকিৎসার জন্য আসে, সেখানে এই ধরনের ঘটনা। বাবা-মা মেয়েকে হারিয়েছেন। বিরলের মধ্যেও বিরলতম ঘটনা।
দুপুর সওয়া একটা নাগাদ শিয়ালদা আদালতের ২১০ নম্বর ঘর খালি করে দিতে বলেন বিচারক। তিনি জানান, দুপুর পৌঁনে তিনটে নাগাদ রায় দেবেন বিচারক।
Be the first to comment