রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:-গোটা দেশের মধ্যে এই প্রথম নিকাশির দূষিত জলকে জীবাণুমুক্ত পরিশুদ্ধ করে তা পুনব্যবহারযোগ্য করে তোলার পথে অগ্রজ ভূমিকা গ্রহণ করলো কলকাতা পুরসভা।
পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি শহরের আধুনিকীকরণ নিয়ে তৎপর কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এতদিন বিভিন্ন বাড়ির নর্দমার কালো পচা জল এবং বর্জ্য পদার্থ ফেলে দেওয়া হত, এবার থেকে তা প্রক্রিয়াকরণ করে পুনব্যবহারযোগ্য করে তুলতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। এর ফলে গঙ্গা দূষণ যেমন কমবে, তেমনি পরিশুদ্ধ জল অপচয় বন্ধ হবে।
উল্লেখ্য, এতদিন কলকাতার অধিকাংশ জল সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে নানাভাবে শোধিত হয়ে নিকাশি পাম্পিং স্টেশন মারফত খালে গিয়ে পড়ে, সেখান থেকে সেই জল বিদ্যাধরী এবং হুগলি নদীতে মেশে। এতদিন নিকাশি জল কোনও কাজে ব্যবহার করা হত না। কিন্তু এবার খরগপুর আইআইটির সাহায্যে সেই জল খাবার বাদ দিয়ে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার যোগ্য করে তোলা হবে।
বুধবার, মেয়র পারিষদ সদস্য (নিকাশি) জানান, “ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ৫০ লিটার নিকাশি জল সংগ্রহ করে খরগপুর আইআইটিকে পাঠানো হয়েছিলো প্রাথমিক স্তরে পরীক্ষার জন্য। দু’বারের সেই পরীক্ষা সফল হয়েছে। আজ সেই পরীক্ষিত নমুনা জল মেয়রকে দেখানোও হয়। এবার আমরা একটা পাম্পিং স্টেশনকে বেঁচে নেবো। সেখানে আমরা খড়গপুর আইআইটির সঙ্গে চুক্তি করে তৈরি করবো এই জীবাণুমুক্ত পরিশুদ্ধ জল। সেখান থেকে দেখবো এই প্রক্রিয়াকরণে আমাদের খরচ কত হচ্ছে। তারপর আগামীদিনে বড় পরিকাঠামো তৈরি করে শহরের বিভিন্ন জায়গায় এই প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে। এই পরিকাঠামো তৈরির পরই জানা যাবে এই প্রযুক্তির জন্য ঠিক কত খরচ হবে কলকাতা পুরসভার” এদিন মেয়র পারিষদ আরও বলেন, “এই প্রযুক্তির কাজ খড়গপুর আইআইটির সঙ্গে যৌথভাবে সম্পূর্ণ হলে, আমরা পেটেন্ট নিয়ে নেবো। এরপর রাজ্য তথা দেশের কেউ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চাইলে তাকে কলকাতা পুরসভা থেকে কিনতে হবে।” এর ফলে কলকাতা পুরসভা বেশ কিছুটা আয়ের মুখ দেখবে বলেই মনে করছেন পুরসভার আধিকারিকদের একাংশ।
এদিন আইআইটি খড়গপুরের বিশেষজ্ঞ শীর্ষেন্দু দে বলেন, “নিকাশি জলকে প্রক্রিয়াকরণ করতে লিটার পিছু আনুমানিক ৬ টাকা থেকে ১২ টাকা খরচ হতে পারে। মডুলার প্ল্যান্টের মাধ্যমে এই নোংরা জলকে পরিস্রুত করার কাজ হবে। এরপর অনুকূল জায়গা বাছাই করে এই প্ল্যান্টটি তৈরি করা হবে।” এদিন তিনি জানান, এই প্রক্রিয়াকরণের পর জলের গুণমান আরোও ভালো হবে। যার ফলে পানীয় জল বাদে একাধিক কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগে মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজে জানিয়েছিলেন, ভূগর্ভস্থ নিকাশির জল শোধন করে অন্য কাজে লাগাবে কলকাতা পুরসভা। রাস্তা থেকে শুরু করে গাড়ি ধোয়ার কাজ হবে সেই জল দিয়ে। ইতিমধ্যে শহর কলকাতার দুই জায়গায় জল পরিশোধনের কাজও চলে। একটি হল রবীন্দ্র সরোবর এবং অপরটি মেট্রোপলিটন বাইপাস। এই দুটি জায়গাতেই প্ল্যান্ট বসানো হবে।
Be the first to comment