ছিল দর্জি। হয়ে গেল খুনি। খুব ঠান্ডা মাথায় খুন করেছিল ৩২ জনকে। মূলত ট্রাকের ড্রাইভার আর খালাসিরা ছিল তার শিকার। পুলিশ এতদিন তার টিকিটিও ছুঁতে পারেনি। এমনকী গত শুক্রবার যখন সে গ্রেফতার হয়, তখনও পুলিশ ভেবেছিল, সে ছোটখাটো অপরাধী। কিন্তু জেরে মুখে সে নিজেই স্বীকার করেছে খুন করার কথা। পুলিশ ভেবেই পাচ্ছে না, অতগুলো খুন করার পরে একজন কীভাবে অত নির্বিকার থাকতে পারে। খুনির মানসিকতা বোঝার জন্য মনোবিদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
খুনির নাম আদেশ খামব্রা। বয়স ৪৮। বাড়ি ভোপালের মান্ডিদীপ অঞ্চলে। আগে সে পেশায় ছিল দর্জি। ২০১০ সালে ঝাঁসির এক দুষ্কৃতী দলের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। বাড়তি টাকার লোভে সে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে । প্রথমদিকে তার কাজ ছিল, ট্রাকের চালক ও খালাসীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে তাদের রাস্তার ধারের দোকানে মদ খাওয়াতে নিয়ে যাওয়া। সেই সুযোগে অপর দুষ্কৃতীরা ট্রাকের মালপত্র চুরি করত।
কিছুদিন বাদে তার ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসার জন্য তাকে অনেক টাকা ঋণ নিতে হয়। তখন সে আরও বেশি অর্থের জন্য হয়ে ওঠে পাক্কা খুনি। সে মদের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ট্রাকচালক ও খালাসিদের খেতে দিত। প্রতিটি খুনের জন্য পেত ৫০ হাজার টাকা। হোসাঙ্গাবাদে এক ব্যক্তিকে খুন করার জন্য পেয়েছিল আরও কম, ২৫ হাজার টাকা।
ট্রাকের মালপত্র চুরি করার অভিযোগে নাগপুর পুলিশ তাকে ২০১৪ সালে গ্রেফতার করেছিল। সে পরে জামিন পায়। পুলিশ বুঝতেই পারেনি সে খুনি।
গত ১২ অগাস্ট মান্ডিদীপ অঞ্চল থেকে ৫০ টন লোহার রড নিয়ে একটি ট্রাক রওনা হয়। কিন্তু ট্রাকটি গন্তব্যে পৌঁছায়নি। পুলিশ তদন্ত করে ট্রাকচালক মাখন সিংয়ের দেহ পায় বিলখিরিয়া অঞ্চলে। ট্রাকটি ভোপালের অযোধ্যা নগর থেকে উদ্ধার করে। এর পরে গ্রেফতার হয় সাত জন। তারা ওই ট্রাকের রডগুলি কেনাবেচা করেছিল। তারা সকলেই জেরার মুখে বলে, এই অপরাধের পিছনে প্রধান ব্যক্তিটি হল খামব্রা। সে জেরার মুখে জানায়, বিভিন্ন অপরাধী গ্যাং তাকে খুনের অর্ডার দিত। সে মধ্যপ্রদেশে ১৫টি, মহারাষ্ট্রে আটটি, ছত্তিশগড়ে পাঁচটি ও ওড়িশায় দুটি খুন করেছে।
Be the first to comment