কাটা মুণ্ডুটা ব্যাগের ভেতর থেকে বার করে এনে লোকটা বলল, ‘এটা আমার স্ত্রীর মাথা। আমি ওকে খুব ভালোবাসতাম স্যার!’ লোকটার অন্য হাতে ধরা খুনে ব্যবহার করা ভোজালি।
সামনে বসা কর্তব্যরত পুলিশকর্মীটি হতভম্ব! কিছুটা সামলে নিয়ে, তিনি বললেন, ‘ওটা ব্যাগে ঢোকাও।’
লোকটা মুণ্ডুটা ব্যাগের ভেতর ঢুকিয়ে আবার বলতে শুরু করল, ‘আমাকে ঠকিয়েছে ও। ও ওর প্রেমিক সুনীলের সঙ্গে ক্ষেতের ধারে দেখা করতে গিয়েছিল। ওকে মেরে ফেলেছি। কিন্তু লোকটা পালিয়ে গেল। আমি ওকে খুন করতে পারলাম না।’
না এটা কোনও সিনেমার দৃশ্য নয়। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে চিকমাগালুর জেলার আজমপুরা পুলিশ স্টেশনে। স্ত্রীর কাটা মুণ্ডু ব্যাগে পুরে এইভাবে পুলিশের কাছে এসে আত্মসমর্পণ করল স্বামী।আর এই গোটা দৃশ্যের ভিডিও তুলে রাখলেন একজন পুলিশকর্মী।
বছর ৩৫ এর সতীশের অভিযোগ, তার স্ত্রী রূপা তাকে ঠকিয়ে সুনীল নামের অন্য একজনের সঙ্গে ব্যাভিচারে লিপ্ত ছিল। সুনীলের নামে নানা অপরাধের অভিযোগ আছে। বেশ কয়েকটা মামলাও দায়ের হয়েছে তার নামে। অথচ তারপরেও রূপা সুনীলের সঙ্গেই পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ খুঁজছিল। বাথরুমে যাওয়ার নাম করে সতীশকে ঠকিয়ে সে সুনীলের সঙ্গে দেখা করত। এমনকী সুনীলকে দেওয়ার জন্য তিন লাখ টাকা ধারও করেছিল সে। আর এতেই শেষ অবধি ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে স্বামী সতীশের। দু’জনকে হাতে নাতে ধরে ফেলে ভোজালি দিয়ে কেটে ফেলে রূপার মাথা!
এই স্বীকারোক্তির পর সতীশকে নিয়ে গিয়ে চিকমাগালুরের শিবানী রেল স্টেশনের কাছে নীলগিরি প্ল্যান্টেশনের কাছে থেকে থেকে তার স্ত্রী রূপার মৃতদেহও উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রায় ন’বছর আগে প্রেম করেই বিয়ে করেছিল রূপা ও সতীশ। তবে উচ্চবর্ণের সতীশের সঙ্গে ওবিসি রূপার এই বিয়ে মেনে নেয়নি গ্রামের কেউ। একঘরে করে দেওয়া হয়েছিল দু’জনকেই। তবে বছর দুয়েক আগে এই বিয়ে মেনে নেয় রূপার পরিবার। সতীশের বাড়িতেই ফিরে যায় তারা। কিন্তু তারপর থেকেই প্রায়শই গণ্ডগোল হত দু’জনের। রূপা ব্যাভিচারে লিপ্ত, এমন অভিযোগ করে আগেও বেশ কয়েকবার থানায় এসেছে সতীশ। সেই সময় পুলিশই দু’জনের গণ্ডগোলের সালিশি করেছে।
শেষ অবধি সন্দেহের বশে রূপাকে নৃশংসভাবে খুন করল সতীশ। তার বিরুদ্ধে পুলিশ খুনের মামলা রুজু করেছে।
Be the first to comment