প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান ডিরোজিও হলে না হয়ে অনুষ্ঠিত হলো নন্দন-৩ প্রেক্ষাগৃহে

Spread the love

ছাত্র বিক্ষোভের জেরে প্রায় ২০০ বছরের  প্রথা ভেঙে এ বছর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান ডিরোজিও হলে না হয়ে অনুষ্ঠিত হলো নন্দন-৩ প্রেক্ষাগৃহে। এমনকী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না রাজ্যপালও। আর যাঁদের জন্য এই অনুষ্ঠান, সেই পড়ুয়াদের কেউই উপস্থিত ছিলেন না সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। আর এই অনুষ্ঠান চলেছে মাত্র ৪০ মিনিট।

যদিও এ ভাবে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হওয়ার দায় পড়ুয়াদের ঘাড়েই চাপিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। এ দিনের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “কেউ আটকালে ক্যাম্পাসে ঢুকবো না।” তিনি আরও বলেন, পড়ুয়াদের শংসাপত্রও তৈরি রয়েছে। আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের সার্টিফিকেট সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানদের থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।

সমাবর্তনের মঞ্চ থেকে প্রেসিডেন্সিতে চলা বর্তমান ছাত্র আন্দোলন প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, “ওরা কেউ হিন্দু হস্টেল দেখে এখানে পড়তে আসেনি। এসেছে প্রেসিডেন্সিকে দেখে। এই কথাটা ওদের মনে রাখতে হবে।” তিনি আরও বলেন, ” হিন্দু হস্টেলে কাজ চলছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে হস্টেলের। তাই প্রযুক্তিগত কারণে খানিকটা দেরি হচ্ছে। কাজ শেষ হতে সময় লাগবে। আর যতক্ষণ না কাজ শেষ হচ্ছে ততক্ষণ আমি পড়ুয়াদের ওখানে পাঠাতে পারবো না।”

সোমবার হস্টেলের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে প্রেসিডেন্সি চত্বর। হিন্দু হস্টেল পড়ুয়াদের থাকার জন্য ফিরিয়ে দিতে হবে, এই দাবিতেই সোমবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন পড়ুয়ারা। গেটের বাইরে থেকেই ফিরে যান উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া।
পড়ুয়াদের অভিযোগ, হিন্দু হস্টেলের একাংশ সংস্কার হয়ে গেলেও সেখানে পড়ুয়াদের থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রায় চার বছর ধরে বন্ধ রয়েছে হস্টেল। বাধ্য হয়ে পড়ুয়ারা এখন থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ভবনের তিন তলায়। মাঝে মাঝে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন বেশ কিছু পড়ুয়া। কিন্তু এতদিন কেটে গেলেও সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। বরং পড়ুয়ারা অভিযোগ করেছেন, সব কিছু জেনেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাই এ বার দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা। তাঁদের সাফ কথা আগে হস্টেল ফেরত দেওয়া হোক। তারপরেই খুলবে গেটের তালা।

সোমবার ছাত্র বিক্ষোভের জেরে শুধুমাত্র উপাচার্যই নয়, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকতে পারেননি রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার সহ অন্যান্য অধ্যাপক, অধ্যাপিকা ও অশিক্ষক কর্মচারীরা। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে চলে যান। এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাসে সমাবর্তন হবে না৷

এ দিন সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের হাতে সাম্মানিক ডিলিট সম্মান  দেওয়া হয়। বর্ষীয়ান এই অভিনেতার সঙ্গেই সাম্মানিক ডিএসসি সম্মান প্রদান করা হয় বিজ্ঞানী সিএনআর রাওকে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*