জঙ্গলমহলের পর্যটনকে নতুন রূপে সাজিয়ে তুলতে উদ্যোগী হলেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব

Spread the love
বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোড়ে পাহাড়ের উপর শালগাছে ঘেরা দুটি বনবাংলো বিস্ফোরক দিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিল মাওবাদীরা। সালটা ২০০৪। রক্তাক্ত হয়েছিল জঙ্গলমহল। বন্ধ হয়েছিল পর্যটকদের আনাগোনা। মুখ থুবড়ে পড়া জঙ্গলমহলের পর্যটনকে নতুন রূপে সাজিয়ে তুলতে উদ্যোগী হলেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব।
তিন দিনের সফরে মন্ত্রী এখন ঝাড়গ্রামে। সোমবার কাঁকড়াঝোরে জেলাশাসক আয়েষা রানি ও পুলিশ-প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। পরে বেলপাহাড়ির সমস্ত দর্শনীয় জায়গাগুলি ঘুরে দেখেন পর্যটনমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক আয়েষা রানি, এসডিও সুবর্ণ রায়, ডিএফও বাসবরাজ হৈলাইচি, এসডিপিও দীপক সরকার-সহ বেলপাহাড়ি বিডিও বরেন বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলপাহাড়িতে মাওবাদীদের যাতায়াতের করিডোরে পর্যটক-কটেজ গড়ে তোলার ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। কাঁকড়াঝোরে মাওবাদীদের ধ্বংস করে দেওয়া বন দফতরের বনানী অতিথিশালাও পরিদর্শন করেন পর্যটনমন্ত্রী। পাহাড় ও সারি সারি শাল গাছের সবুজে মোড়া এই এলাকাতে হোম-স্টে ট্যুরিজমের উপর বিশেষ জোর দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। তা ছাড়াও, এখানে তৈরি করতে চান ১০ থেকে ১২ টি কটেজ । পর্যটকরা যাতে প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করে পারেন তার জন্য তৈরি করা হবে কিছু ওয়াচ-টাওয়ার । এই টাওয়ারগুলি রক্ষণাবেক্ষণ ও গাইড হিসেবে নিয়োগ করা হবে স্থানীয় আদিবাসী যুবকদের। ফলে পর্যটনের পাশাপাশি, এলাকায় কর্ম সংস্থানও তৈরি হবে।
সোমবার চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা মন্দির, ডুলুং নদী, চিল্কিগড়ের রাজপ্রাসাদ ঘুরে দেখেন মন্ত্রী। প্রাচীন বিষ্ণু মন্দিরটির ধ্বংসাবশেষ সংরক্ষণ, ডুলুং নদীর উপর ঝুলন্ত সেতু, রাজ পরিবারের সঙ্গে কথা বলে রাজবাড়ির সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে জেলাশাসক আয়েষা রানিকে নির্দেশ দেন তিনি। জামবনির পরিযায়ী পাখিদের গ্রাম কেন্দুয়ার নজর মিনার তৈরির কথাও বলেন। পরে মন্ত্রী যান জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক ও মল্লদেব রাজপরিবারের কুলদেবী সাবিত্রীর মন্দিরে।
মঙ্গলবার প্রথমে কাঁকড়াঝোড়ের অতিথিশালা থেকে বেরিয়ে আমলাশোল পরিদর্শনে যান । সেখান থেকে ফিরে এসে ময়ূরঝর্ণা হয়ে খাঁদারানি লেক পরিদর্শন করেন। খাঁদারানি লেকের ধারে কিছু সংখ্যক কটেজ গড়ার কথা বলেন। তারপর গাডরাসিনি পাহাড়ের কোলে ঝর্ণা ও একটি আশ্রম পরিদর্শন করে ঝাড়গ্রাম ফেরেন তিনি। কাঁকড়াঝোড় থেকে ঝাড়গ্রামের দিকে মাত্র একটি বাস চলাচল করে। তাই পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য ওই রুটে আরও কয়েকটি সরকারি বাস চালানোর কথা বলেন তিনি।
জেলাশাসক ও এসডিপিও  (ঝাড়গ্রাম) দীপক সরকারকে পর্যটন মন্ত্রী বলেছেন, ‘এলাকাবাসীর অবস্থা স্বচ্ছল হলে এবং এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বাড়লে অশান্তি দানা বাধতে পারবে না।’ তাঁর কথায়, জঙ্গলমহল মুখ্যমন্ত্রীর নয়নের মণি। কাজেই আরও বেশি সংখ্যক পর্যটক টানতে যা যা করণীয় তার সবটাই করা হবে এখানে। গৌতমবাবু বলেছেন, ‘‘ট্যুরিস্ট ডিপার্টমেন্টর ওয়েবসাইটে এই সব এলাকা গুলির ছবি ও বর্ণনা আমরা দিয়ে দেব। ফলে আরও বেশি পর্যটক আসবে। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনশিল্পে পাঁচ নম্বরে আছে, তাকে আমরা এক নম্বরে আনতে চাই।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*