পোস্তা থানা এলাকার বড়তলা স্ট্রিট। বুধবার সন্ধ্যায় জমজমাট এই রাস্তায় আচমকাই ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ পান পথচারীরা। ছুটে গিয়ে দেখেন একটি বহুতলের সামনে রক্তাক্ত পড়ে রয়েছেন একজন প্রৌঢ়া ও এক যুবতী। যুবতীর চোখে কাপড়ের ফেট্টি বাঁধা, তাঁকে আকড়ে ধরে কোলের মধ্যে গুটিসুটি মেরে পড়ে রয়েছে একটি শিশুকন্যা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, ঘটনাটা ঘটেছে সন্ধ্যা ৬টার আশপাশে। সরু বড়তলা স্ট্রিটের একটি বহুতলের সামনে থেকে ওই যুবতী ও তাঁর শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়েছে ঘটনাস্থলেই। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পোস্তা থানার পুলিশ ও লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম সোহিনী দেবী তাপাড়িয়া (৬২)। বহুতলের পাঁচতলা থেকে প্রথম ঝাঁপ মারেন তিনি। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রৌঢ়ার বছর বত্রিশের মেয়ে ইন্দিরা তাঁর তিন বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে ঝাঁপ দেয়। ইন্দিরার চোখে কাপড় বাঁধা ছিল। মেয়েকে নিজের কাপড়ে জড়িয়ে রেখেছিলেন তিনি। শিশুটিকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ইন্দিরার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর চিকিৎসা চলছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে।
এই ঘটনা কি নিছকই দুর্ঘটনা, নাকি আত্মহত্যা? কোনও সুইসাইড নোট পায়নি পুলিশ। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক অশান্তির জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এলাকায় খোঁজ নিয়ে পুলিশ জেনেছে, দীর্ঘদিন ধরেই সাংসারিক অশান্তি চলছিল তাঁদের। চার বছর আগে মানিকতলার বাসিন্দা অমিত মোহতার সঙ্গে বিয়ে হয় ইন্দিরার। অমিত পেশায় কাপড়ের ব্যবসায়ী। সম্প্রতি অমিতের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছিল ইন্দিরার। এই বিচ্ছেদ নিয়ে তাঁদের পরিবারে অশান্তি লেগেই থাকত। মানসিক অবসাদেও ভুগছিলেন ইন্দিরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
Be the first to comment