এতদিন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রধান অভিযোগ ছিল, মোদী সরকার বিরোধীদের দমিয়ে দিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ব্যবহার করছে। সিবিআই, ইডি-র মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে লেলিয়ে দিচ্ছে বিরোধীদের বিরুদ্ধে। এ বার অন্ধপ্রদেশ এবং বাংলার সরকার সিবিআই প্রবেশে ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়ায়, পাল্টা অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। গেরুয়াবাহিনীর তোপ, ‘দুর্নীতিগ্রস্তরা জোট বেঁধেছে।’
বস্তুত, ১৯৪৬ সালের দিল্লি পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট আইনে সিবিআই গঠিত হয়েছিল। ওই আইনের ৫ এবং ৬ নম্বর ধারায় বলা রয়েছে, কোনও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করতে গেলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অনুমতি নিতে হবে। যাকে ‘জেনারেল কনসেন্ট’ বলা হয়েছে আইনে। গত ৮ নভেম্বর চুপচাপ অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নায়ডুর সরকার এই ‘জেনারেল কনসেন্ট’ প্রত্যাহার করে নেয়। শুক্রবার সক্কাল সক্কাল তা জানাজানি হতেই দুপুরে তৃণমূলের সাধারণ পরিষদের বর্ধিত বৈঠকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও, চন্দ্রবাবুর পদক্ষেপকে সমর্থন করে দেন। সমর্থন জানান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও। এরপর দিদি হেলিকপ্টারে চন্দননগর উড়ে গেলেও, সরকারি আধিকারিকরা কাজের কাজটি সেরে ফেলেন। অন্ধ্রের বাবুর মতো বাংলার দিদিও সিবিআই-এর পায়ে বেড়ি পরিয়ে দেন।
বিজেপি-র রাজ্য সভার সাংসদ জি ভি এল নরসিমা রাও বলেন, “সরকারি ক্ষমতাকে অপব্যবহার করা হচ্ছে। দুর্নীতিগ্রস্তরা এককাট্টা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, মোদী সরকার যে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে, এই অভিযোগ তৃণমূল অনেক দিন ধরেই তুলছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থায় গৃহযুদ্ধের পর তা নিয়ে আরও সুর চড়ায় বাংলার শাসকদল। শুক্রবার, মমতার সভা শেষ হওয়ার পর বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেছিলেন, “সিবিআই আটকানোর কথা বলে আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস একটি আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত দল।” সেই সঙ্গে বাংলা বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি বলেন, “সিবিআই-কে ঠেকানো অত সহজ নয়। দেশে আইন-কানুন আছে।” তা ছাড়া অনেকের মতে বাংলায় ‘জেনারেল কনসেন্ট’ প্রত্যাহার করলেও সারদা, রোজভ্যালি, প্রয়াগের মতো চিটফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্তে এর বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়বে না। কারণ, ওই তদন্ত হচ্ছে দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে এবং পর্যবেক্ষণে।
Be the first to comment