মমতার সঙ্গে দেখা করতে সোমবার কলকাতায় আসছেন চন্দ্রবাবু নাইডু; পড়ুন!

Spread the love
তেলঙ্গনায় চন্দ্রশেখর রাওকে জবরদস্ত ধাক্কা দিতে ইতিমধ্যে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। ৭ ডিসেম্বর তেলঙ্গনায় বিধানসভা ভোট হবে। তার আগে হায়দরাবাদে একটি বিশাল জনসভা করে যৌথ প্রচারের শুভ মহরত করতে চাইছেন তাঁরা। রাজনৈতিক সূত্রে খবর, হায়দরাবাদের ওই মঞ্চে এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চাইছেন রাহুল-চন্দ্রবাবু।
সোমবার মমতার সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় আসার কথা অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর। তেলুগু দেশম সূত্রের মতে, হায়দরাবাদের সভার ব্যাপারে ইতিমধ্যে মমতার সঙ্গে ফোনে আলোচনা করেছেন বাবু। কংগ্রেসের তরফেও দিদির কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। রাহুল গান্ধীদের উদ্দেশ্য হায়দরাবাদের সভা মোদী বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলির সমষ্টিগত সভা হয়ে উঠুক। সোমবার তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে চন্দ্রবাবুর বৈঠকের পর এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হতে পারে।
হায়দরাবাদে প্রস্তাবিত ওই সভার আগে ২২ নভেম্বর দিল্লিতে বিরোধী দলগুলির সভা ডেকেছিলেন চন্দ্রবাবু। আগে ঠিক ছিল, নায়ডুর সঙ্গে কথা বলে দিল্লির বৈঠকে যোগ দেবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তৃণমূলের শীর্ষ একটি সূত্রের মতে, আগের পরিকল্পনায় অদল বদল হতে পারে। হায়দরাবাদের সভায় যোগ দিতে মমতা রাজি হয়ে গেলে, দিল্লি নাও যেতে পারেন তিনি। তবে এ ব্যাপারে তাঁর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা সোমবারই জানাবেন নেত্রী।
ঘটনা হল, হায়দরাবাদে সভা করে যে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দলকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য প্রস্তুতি চলছে, তাঁর সঙ্গে এক সময় বন্ধু সম্পর্ক ছিল মমতার। কয়েক মাস আগে নবান্নের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন চন্দ্রশেখর। কিন্তু পরে তৃণমূল নেতৃত্ব দেখেন, মোদী-অমিত শাহদের হাতে গড়গড়া খাচ্ছেন চন্দ্রশেখর। সংসদে বিজেপি সরকারের পক্ষ নিচ্ছেন।
বস্তুত বিজেপি-র সঙ্গে চন্দ্রশেখরের এই নব্য সখ্যই এখন তেলঙ্গনার ভোটে রাহুল-চন্দ্রবাবুদের হাতিয়ার। সেই লড়াইতে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির মুখগুলি হায়দরাবাদের মঞ্চে এক জোট হলে তেলঙ্গনা রাষ্ট্রীয় সমিতির বিপদ হতে পারে। প্রথমত, তেলঙ্গনায় সাড়ে ১২ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটের বারো আনাই তখন বিরোধীদের অনুকূলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। তার থেকেও বড় হল, চন্দ্রশেখরের পরাজয় হল বিজেপি-ও ধাক্কা খাবে।
তেলঙ্গনায় চন্দ্রশেখর বিরোধী মহাজোটে কংগ্রেস, তেলুগু দেশম ছাড়াও সামিল হয়েছে সিপিআই এবং তেলঙ্গনা জনসমিতি। হায়দরাবাদের সভায় জোটের এই শরিকরাও থাকবেন। এদের সঙ্গে কংগ্রেস-টিডিপি-র আসন বন্টনের সূত্রও পাকা হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস ও তেলুগু দেশমের নেতারা জানাচ্ছেন, হায়দরাবাদের মেগা মঞ্চে মমতা ছাড়াও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে কর্ণাটকে কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীকে। সেই সঙ্গে ডিএমকে সুপ্রিমো এম কে স্ট্যালিনও হাজির থাকতে পারেন ওই সভায়।
তবে বড় প্রশ্ন হল, হায়দরাবাদের সভায় মমতা যোগ দেবেন কিনা! তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, হ্যাঁ বা না-তে এর উত্তর দিদি এখনও দলে কাউকে জানাননি। তবে হ্যাঁ-র সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, ইদানীং চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গে দিদি-র সম্পর্ক বেশ ভাল। এক সময় বাজপেয়ী জমানায় দু’জনেই এনডিএ-র শরিক ছিলেন। চোদ্দর নির্বাচনে বিজেপি-র সঙ্গে জোট করে লড়ার পর বাবু এখন এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন। তার পর থেকে দিদির সঙ্গে আকছার তাঁর ফোনে কথা হয়। এমনকি তিনি যে অন্ধ্রে সিবিআই-য়ের গতিবিধিতে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চাইছেন সে কথাও দিদিকে জানিয়েছিলেন বাবু। পরে তাঁর পথ অনুসরণ করেছে নবান্নও।
দ্বিতীয়ত, উনিশের ভোটের দিকে তাকিয়ে দিদির মূল অবস্থান হল এখন থেকে কাউকেই জোটের নেতা মানা হবে না। আগে বিজেপি-কে ‘ফিনিশ’ করা হোক। তার পর দেখা যাবে। এ ব্যাপারে রাহুল গান্ধীও এক মত। সন্দেহ নেই হায়দরাবাদে রাহুল-বাবু-মমতা সভা করলে গোটা দেশের নজর থাকবে সেই মঞ্চের উপর। যা সর্বভারতীয় দল হিসাবে তৃণমূল সম্পর্কেও ধারনাও মজবুত করবে। তাই বাবুর এই প্রস্তাবে দিদি সম্মতি দিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*