অবশেষে মঙ্গলে পা রাখলো নাসার স্বয়ংক্রিয় মহাকাশযান ‘ইনসাইট’; পড়ুন!

Spread the love
মঙ্গলবার, ভারতীয় সময়ে গভীর ৩টে। লস অ্যাঞ্জেলেসের জেট পপুলেশন ল্যাবরেটরির ইঞ্জিনিয়াররা আনন্দে চিৎকার করে উঠলেন। চলল হাততালি, একে অন্যকে জড়িয়ে ধরা। হবে নাই বা কেন, ‘সাত মিনিটের’ টানটান উত্তেজনার সময় কাটিয়ে অবশেষে মঙ্গলে পা রেখেছে নাসার স্বয়ংক্রিয় মহাকাশযান ‘ইনসাইট’।
মে মাসে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল এই মহাকাশযান। খরচ হয়েছিল প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। তারপর দীর্ঘ ছ’মাস মহাকাশে পাড়ি দিয়ে ৫৪৮ মিলিয়ন কিলোমিটার অতিক্রম করে অবশেষে মঙ্গলের মাটিতে পা রেখেছে ইনসাইট। পা রাখার মিনিট খানেকের মধ্যেই সেলফি তুলেও পাঠিয়ে দিয়েছে এই মহাকাশযান।
মঙ্গলে পা রাখার শেষ কিছু মুহূর্ত লাইভ দেখানোর ব্যবস্থা করেছিল নাসা। আমেরিকার বিভিন্ন মিউজিয়াম, লাইব্রেরিতে ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ব্যবস্থা ছিল টাইমস স্কোয়ারেও। সেখানে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়েই প্রায় ৪০-৫০ জন সাক্ষী থেকেছেন এই ঐতিহাসিক ঘটনার।
তবে এই সাফল্য সহজে আসেনি। উৎক্ষেপণের পরে একের পর এক বাধা অতিক্রম করেছে ইনসাইট। তারপরে সে নিজের গন্তব্যে পৌঁছেছে। আগামী ২ বছর মঙ্গলের বুকেই সময় কাটাবে এই মহাকাশযান। তার প্রধান কাজ হলো মঙ্গলের মাটিতে গর্ত করে ভেতরের টেকটনিক স্ট্রাকচার, মাটির গঠন, ঘনত্ব প্রভৃতি পরীক্ষা করে দেখা ও তার খবর পাঠানো।
নাসার তরফে জানানো হয়েছে, এই পরীক্ষা মূলত পৃথিবীর জন্যই করা। মঙ্গল প্রথমে অনেক বেশি উষ্ণ গ্রহ ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা ঠাণ্ডা গ্রহে পরিণত হয়েছে। কী কারণে এই পরিবর্তন হচ্ছে, সেটা গবেষণা করা বিজ্ঞানীদের অন্যতম উদ্দেশ্য। এই কারণগুলো জানতে পারলে ভবিষ্যতে তা পৃথিবীর উপকারে লাগবে বলেই ধারণা নাসার বিজ্ঞানীদের।
ইনসাইট হলো মঙ্গলে পাঠানো নাসার অষ্টম মহাকাশযান। তবে এর আগের সাতটি মহাকাশযান মঙ্গলের মাটিতে পা দেয়নি। তারা মূলত মঙ্গলের বাইরের হাওয়ার স্তর, উপর থেকে চারপাশে প্রদক্ষিণ করা, এই কাজগুলোই করেছে। এই প্রথম মঙ্গলে পা দিয়ে কোনও স্বয়ংক্রিয় মহাকাশযান কাজ করবে।
আর এই ল্যান্ডিংয়ের সময় হয়েছিল সমস্যা। মঙ্গলের মাটিতে পা দেওয়ার আগে বেশ কিছু স্তর অতিক্রম করে এই মহাকাশযানকে যেতে হয়েছে। প্রায় ৭ মিনিট সময় লেগেছে এতে। এই সময় চিন্তায় ছিলেন বিজ্ঞানীরা। কারণ এত কাছে এসে কোনও সমস্যা হলে সব পরিশ্রম বেকার হয়ে যেত। তাই এই সময়কে ‘সেভেন মিনিটস অফ টেরর’ বা ‘সাত মিনিটের সন্ত্রাস’ বলেছেন তাঁরা। তবে সব বাধা কাটিয়ে মঙ্গলে পা রেখেছে ইনসাইট। এখন অপেক্ষা শুধু কাজ শুরু করার।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*