চলে গেলেন মতুয়া পরিবারের বড়মা; সকলের বড়মা

Spread the love

মাসানুর রহমান,

প্রয়াত হলেন মতুয়া মহাসংঘের প্রধান বড়মা, বীণাপাণি দেবী। দীর্ঘ দিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারনে ভুগছিলেন। আজ সন্ধ্যায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ১০১ বছর। তার এই প্রয়াণের সাথে সাথেই মাতৃহারা হলেন মতুয়া মহাসংঘ, মাতৃহারা হলেন সকলে।

মতুয়া হিন্দুধর্মীয় একটি লোকসম্প্রদায়। গোপালগঞ্জ জেলার ওড়াকান্দি নিবাসী হরিচাঁদ ঠাকুর প্রেমভক্তিরূপ সাধনধারাকে বেগবান করার জন্য যে সহজ সাধনপদ্ধতি প্রবর্তন করেন, তাকে বলা হয় ‘মতুয়াবাদ’। এই মতবাদের অনুসারীরাই ‘মতুয়া’ নামে পরচিত।

বড়মার জন্ম বরিশালের জব্দকাঠিতে। ১৯৩৩ সালে তাঁর বিয়ে হয় ফরিদপুরের ওরাকান্দির মতুয়া মহাসংঘের প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ ঠাকুরের বংশধর প্রমথরঞ্জন ঠাকুরের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে মতুয়ার নানা কাজের সঙ্গে যু্ক্ত হয়ে পড়েন বড়মা, বুঝতে শেখেন সাংগঠনিক কাজকর্মও। স্বাধীনতার লড়াইয়ে যুক্ত ছিলেন প্রমথরঞ্জন ঠাকুর তাই দেশ স্বাধীনের লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন বীণাপাণি দেবীও।

১৯৪৭ সালে স্বাধীন হল দেশ। সেই সঙ্গে এল দেশভাগ, তৈরি হল নতুন সংকট। ১৯৪৮ সালে বড় ছেলে কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর ও পরিবারের সকলকে নিয়ে এদেশে চলে এলেন বীণাপাণি দেবী, শুরু হল নতুন লড়াই। তারপরই তিনি চব্বিশ পরগনায় উদ্বাস্তু কলোনি গড়ে তুললেন। নাম হল ঠাকুরনগর। এখান থেকেই ক্রমে ছড়াতে থাকে মতুয়াদের মহাসংঘের কাজকর্ম। এখানেই তৈরি হয় মন্দির। ছোট ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর। ১৯৯০ সালে স্বামী প্রমথরঞ্জন ঠাকুরের মৃত্যুর পর মতুয়া মহাসংঘের দায়িত্ব তুলে নেন বীণাপাণি ঠাকুর। তখন থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন মতুয়াদের বড়মা।

তাঁর এই প্রয়াণে মাথার ওপর থেকে ছাদ হারালেন অসংখ্য মানুষজন। আগামীকাল পূর্ণ রাস্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

সকলের হৃদয়ে শান্তিতে ঘুমান বড়মা………

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*