পিয়ালি আচার্য,
ছবি সৌজন্যে- (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক)
হাওড়ার আড়ুপাড়ায় হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৬ মার্চ, বুধবার রাজ্যের প্রথম হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্র তথা নরেন্দ্র মোদীকে একহাত নিয়ে বলেন, নরেন্দ্র মোদীর মতো বাথরুমের উদ্বোধন করে নিজেদের প্রচার আমরা করি না। এত পাবলিসিটির কী দরকার? কাজ করবে না, শুধু পাবলিসিটি। আরে বাবা কাজ করলে এমনি এমনি পাবলিসিটি হয়।
নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গত ৫ বছরে কর্মসংস্থান ভীষণভাবে বিপর্যস্ত। নোটবন্দি করেছিলেন, বলেছিলেন প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেবেন। কোথায় কী? বরং নোটবন্দির ফলে ২০১৬ থেকে ২০১৯ এর মার্চ অবধি ২ কোটি ছেলেমেয়ে চাকরি হারিয়েছে। এটা আমি অত্যন্ত অথেন্টিক বলছি। আমার কাছে তথ্য আছে। ১২ হাজার কৃষক দেশে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আমরা আমাদের রাজ্যে ৪০ ভাগ বেকারত্ব কমিয়েছি। তাই আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শিখাও কথাটা আমরা অনুসরণ করি। কন্যাশ্রী, খাদ্যসাথী সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়েছে, পুরস্কৃত হয়েছে। এছাড়া উৎকর্ষ বাংলা, সবুজসাথীও পুরষ্কার পাওয়ার মুখে।
দুই-তিন দিনের মধ্যে নির্বাচন ঘোষণা হবে। এখন কেন্দ্র নানা প্রকল্পের কথা বলছে। ডেট এক্সপায়ার হওয়ার পর ওষুধ খেয়ে লাভ কী? এখন আবার কী ঘোষণা? ওরা চায় মিসাইল, ওরা চায় বন্দুক, ওরা চায় বোমা। তোমরা জওয়ানদের রক্ত দিয়ে সুযোগের রাজনীতি করছো? লজ্জা করে না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি আর্মির সঙ্গে, আমি ফোর্সের সঙ্গে, আমি দেশের সঙ্গে, আমি মানুষের সঙ্গে, আমি সভ্যতার সঙ্গে, আমি একতার সঙ্গে, আমি সংহতির সঙ্গে, আমি সম্প্রীতির সঙ্গে, আমি শিক্ষার সঙ্গে, আমি সংস্কৃতির সঙ্গে আছি; কিন্তু আমি মোদীবাবু বা মোদীরাজের সঙ্গে নেই। বিরোধিতা করার জন্য ওরা গুগলে সবসময় দেখে আমার ধর্ম কী? আরে আমার ধর্ম তুমি বুঝবে কী করে? আমার ধর্ম মানবতা। দাঙ্গা করে করে অভ্যস্ত হাতগুলো রক্তে রাঙা, তোমরা বুঝবে কী করে মানবতা কাকে বলে? আমি দেশের পক্ষে, দশের পক্ষে, মানুষের পক্ষে; বিজেপির বা মোদীর পক্ষে নই, কালো তালিকাভুক্ত সরকারের পক্ষে নই।
ওরা গেলে দেশ বাঁচবে, বিজেপির উদ্দেশ্যে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা মোদীবাবুদের সরকার সরাবোই। ন্যাশনাল চ্যনেলগুলোকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছে। দেশের অবস্থা খারাপ। দেশ বাঁচলে, ঐক্য বাঁচলে মানুষ বাঁচবে। ওরা শ্রেণী বিভাগ করতে চাইছে, বিদ্বেষ তৈরি করতে চাইছে, মানুষে মানুষে ঘৃণা তৈরি করতে চাইছে। গণপিটুনির সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। ওরা গেলে দেশ বাঁচবে। অনেক সরকার দেখেছি কিন্তু এরকম সরকার দেখিনি। সবাইকে টেররিস্ট করে দিয়েছে। উনিই একমাত্র দেশপ্রেমিক আর আমরা সবাই দেশদ্রোহী?
একজন প্রধানমন্ত্রীকে সবাই ভয় পায়, বলে গব্বর সিং এসে গেছে। এদের হাত থেকে দেশটাকে রক্ষা করতে হবে। ১৮ বছর বয়সকে এগিয়ে আসতে হবে। তারা ভয় পায় না, থমকে দাঁড়ায় না। তাই ছাত্র যুব জোট বাঁধুন, শ্রমিক কৃষক জোট বাঁধুন, মা বোনেরা জোট বাঁধুন, সব ধর্ম জোট বাঁধুন। আসুন আমরা সকলে মিলে আমাদের মাতৃভূমি, কর্মভূমি, সভ্যতার ভূমি, সংস্কৃতির ভূমিকে রক্ষা করি। আসুন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ে তুলি, ঐক্যবদ্ধ বাংলা গড়ে তুলি। আর এই ঐক্যবদ্ধ বাংলাই ঐক্যবদ্ধ ভারতকে পথ দেখাবে।
Be the first to comment