রাজ্য মন্ত্রীসভা বৃহস্পতিবার ৭ মার্চ এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেয়। কলকাতার বস্তি অঞ্চলের মানুষদের ঠিকানা এবার হবে হাইরাইজ। অপ্রশস্ত ঘিঞ্জি জায়গা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে মুক্তি মিলবে বস্তিবাসী মানুষদের। তথাকথিত জমিদাররা একসময় তাঁদের জমিতে দরিদ্র মানুষদের বসবাসের অধিকার দিয়েছিলেন। তাঁরাই পরে ঠিকা টেনান্ট নামে অভিহিত হন। এই ঠিকা টেনান্টরা আবার আইনের মাধ্যমে ভাড়াটিয়া বসানোর সুযোগ পায়। প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ মূলত কলকাতা, হাওড়া এবং আসানসোলের কিছু অংশে এইভাবে বসবাস করেন। কলকাতা শহরে ২ হাজার একর এবং হাওড়া শহরে ৫১৭ একর এইরকম জমি আছে। রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকের এটাই বিশেষত্ব যে এই ঠিকা টেনান্ট বা ভাড়াটিয়ারা এরপর থেকে জি প্লাস ফোর অর্থাৎ ৫ তলা অথবা জি প্লাস থ্রি অথবা চারতলা বাড়ি করে থাকতে পারবে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে অনেকেরই হয়তো এইরকম ফ্ল্যাট বাড়ি তৈরি করার ক্ষমতা নেই, সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার বাংলার বাড়ি প্রকল্পের অধীনে ৩৮৫ স্কোয়ার ফিট করে এক একটি ফ্ল্যাট তাদের করে দেবেন। এতে তারা সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারবেন। মুম্বইয়ের বস্তিবাসীদের জন্য যে “ধারাভি প্রকল্প” আছে তাতে বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন দিলেও বাকি অংশটা প্রমোটারদের দিয়ে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর মানবিকতা এতটাই যে হাইরাইজ হওয়ার ফলে বস্তির যে অতিরিক্ত জায়গা সেখানে বাচ্ছাদের পার্ক, অডিটোরিয়াম বা সবুজায়ন করা হবে। কোনওভাবে কোনও জমি প্রমোটারদের দেওয়া হবে না। রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকের পর দুই মন্ত্রী পার্থ চট্টপাধায়ায় ও ফিরহাদ হাকিম সাংবাদিকদের একথা জানান।
এর পাশাপাশি কলোনি এলাকার জন্য একটি উদবাস্তু নীতিও তৈরি করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যাই এবিষয়ে তাঁর মতামত দিয়েছেন। এবিষয়ে তৈরি হয়েছে একটি মন্ত্রী গোষ্ঠী। এতে আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অমিত মিত্র, সুব্রত মুখার্জি, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মলয় ঘটক, শুভেন্দু অধিকারী, রত্না কর ঘোষ, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, গৌতম দেব প্রমুখ। তাঁরা উদবাস্তু নীতির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রস্তাব দেবেন এবং মুখ্যমন্ত্রী এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
Be the first to comment