কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যতই তৃণমূলের দিল্লির ধর্না কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করুক না কেন পূর্ব ঘোষণা মতই চলবে আন্দোলন চলবে। শনিবার, দুপুর ২টোয় ভার্চুয়াল লাইভে এই বার্তা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে দিল্লির আন্দোলনের রূপরেখা স্পষ্ট করে দেন তিনি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে অভিষেক জানিয়ে দেন যতদিন না পর্যন্ত কেন্দ্রের থেকে বকেয়া আদায় করা যাচ্ছে, ততদিন আন্দোলন জারি থাকবে। একই সঙ্গে দিল্লির কর্মসূচি সম্পর্কেও ঘোষণা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
• ২ অক্টোবর- রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, ঘণ্টা দুয়েক শান্তিপূর্ণ ধর্না। বাংলার প্রতি কোণায় গান্ধী মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানাবেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা
• ৩ অক্টোবর- দিল্লির যন্তরমন্তরে সভা, সেটা বাংলার সব জায়গায় লাইভ টেলিকাস্ট হবে। সেখান থেকেই আগামী দিনে লড়াইয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে
২ তারিখ রাজঘাটে শান্তিপূর্ণভাবে ধর্নায় বসবেন অভিষেকরা। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গান্ধীজির মূর্তি বা আবক্ষ মূর্তিতে মালা দেওয়া হবে। বিকালবেলা শান্তিপূর্ণ মোমবাতি মিছিল করতে পারেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
৩ অক্টোবর দিল্লি যন্তরমন্তরে অবস্থান হবে। প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতে লাইভ টেলিকাস্ট হবে। অঞ্চল সভাপতিরাও এই উদ্যোগে শামিল হবেন। “যতক্ষণ না আমাদের বকেয়া আদায় না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত থাকবে না। স্বৈরাচারী সরকারের বিসর্জন হবেই”- তোপ অভিষেকের।
টিকিটের জন্য অগ্রিম টাকা নেওয়ার পরও গরিব মানুষের দিল্লি যাওয়ার জন্য ট্রেন দেয়নি রেল। এত বিরোধিতা সত্ত্বেও এদিন ভার্চুয়াল ভাষণে দিল্লিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বার্তা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি বলেন, ”বাংলার বকেয়া আনবই, কেউ রুখতে পারবে না। কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা হবে।” কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বলেন, নিষ্ঠুর কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার গরিবের মাথার উপর ছাদ, ১০০ দিনের কাজের টাকা কেড়ে নিয়েছে।
এর আগে দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন অভিষেকরা। কিন্তু তখন তিনি দেখা করেননি। এবারও তিনি বৈঠক করতে চাননি। তৃণমূলের চিঠির উত্তরে জানিয়েছেন তিনি ব্যস্ত। এর আগে বাংলার বকেয়া আদায়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাংলার প্রাপ্য দেয়নি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। অভিষেকের কথায়, “এই যে বলা হচ্ছে দুর্নীতি আর দুর্নীতি। বাংলায় একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল এসেছে। প্রায় ৭০টি কেন্দ্রীয় দল এসে দেখে গিয়েছে আবাস যোজনায় কোথাও কেন গরমিল হয়েছে কি না! তারপরেও কেন কিছু হল না? আমাদের নেত্রী শুধু চিঠিই লেখেননি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আবেদনও করেছেন।“ এরপরেই তৃণমূল সাংসদের প্রশ্ন, “১০০দিনের কাজের দুর্নীতি হয়েছে বলছেন কে বারণ করেছে ব্যবস্থা নিতে। ২ হাজার, ২০০জনের জন্য কেন এতজনের টাকা আটকে রাখবেন?“
মোদি সরকারকে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, “দেশের প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি হবে আর গরিব মানুষের বাড়ি হবে না? আগামী দিনে জোরালো জবাব পাবেন। ২ তারিখ ৩ তারিখ আন্দোলন হবে কারও ক্ষমতা থাকলে আটকাক। ইটকা জবাব পাত্থরসে কীভাবে দিতে হয় তার জবাব গণতান্ত্রিক ভাবে পাবেন। ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা আদায় করে ছাড়ব।“ গরিব মানুষকে ট্রেনে যেতে দেননি, আর মোদি ট্রেনের উদ্বোধন করছেন!
অভিষেক জানান, বাংলার বঞ্চিত মানুষের চারদিন থাকার জন্য রামলীলা ময়দান চেয়েছিলাম, দেয়নি। যেখানে অনুমতি চেয়েছি, দেয়নি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার- অভিযোগ তৃণমূলের সরবভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের। এরপরেই তীব্র আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, যদি মনে করেন এতে আমাদের আটকানো যাবে আপনি ভুল করছেন। যতদিন বাংলার বাকেয়া না পওয়া যাচ্ছে, ততদিন লড়াই জারি থাকবে। তাঁর কথায়, ২০২১-এ যেভাবে জবাব দিয়েছিল, এবার আরও জোরালো জবাব দেবে। আর দিল্লিতে একজন গরিব মানুষের গায়েও যদি হাত পড়ে, গণতান্ত্রিকভাবে তার জবাব দেব তৃণমূল।
Be the first to comment