অনুন্নয়ন ও দিল্লির ‘পুতুল সরকার’কে ছুড়ে ফেলে মেঘালয়ে নতুন সূর্যের আলো ফুটবে। আসবে উন্নয়নের জোয়ার। এই স্বপ্নের বীজ মেঘরাজ্যে বপন করতে জোরকদমে ময়দানে নেমে পড়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার গারো হিলসের আমপাতিতে তৃণমূলের জনসভায় নতুন মেঘালয়ের আলো দেখালেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি রীতিমতো তোপ দেগে তুলে ধরলেন বর্তমান সময়ে জোট সরকারে মেঘালয়ের বেহাল অবস্থার কথা।
এদিনের জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাকে সরাসরি তোপ দেগে অভিষেক বলেন, “গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর নিজের কেন্দ্রে আমি পদযাত্রা করছিলাম, ফেরার সময় আমি দেখলাম গোটা রাস্তা অন্ধকার। আমি আমার সঙ্গে থাকা মুকুল সাংমা জিজ্ঞাসা করলাম এটা কি মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র? উনি বললেন হ্যাঁ। এখন আপনারা ভেবে দেখুন যে মুখ্যমন্ত্রী তার নিজের কেন্দ্রে একটা বিদ্যুতের খুটি পুঁততে পারে না যার নিজের এলাকা অন্ধকারে ডুবে রয়েছে সে রাজ্যকে আলো দেখাবে কীভাবে?” এরপরই অভিষেক বলেন, “গত ৫ বছরে এই সরকারের থেকে উন্নয়নের অনেক আশা করেছিলেন আপনারা। কিন্তু হতাশ হয়েছেন। লাগাতার দুর্নীতি চালিয়ে গিয়েছে এনপিপি। সময় আসছে ওদের শিক্ষা দেওয়ার। আগামী ২৭ তারিখ এই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকে শাস্তি দিতে হবে। আপনাদের ভোট ওদের জন্য এমন শাস্তি হবে যা ওরা সারা জীবনের জন্য মনে রাখবে।”
এর পাশাপাশি মেঘালয়ে তৃণমূলের ‘ভিশন’ স্পষ্ট করে দিয়ে অভিষেক বলেন, “১ বছর আগে আমাদের সফর শুরু হয়েছে মেঘালয়ে। আজ এখানে তৃণমূলের ৫ থেকে ৬ লক্ষ সদস্য। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি এখানকার বেকার যুবক ও মহিলাদের মাসিক ভাতা দেওয়ার। সেইমতো ৪ লক্ষ বেকার যুবক মাই কার্ড ও ৪ লক্ষ মহিলা উই কার্ড রেজিস্টার করেছেন। ৪ লক্ষ বেকার যুবক এখানে ‘মাইকার্ড’ রেজিস্টার করেছে, যার অর্থ কনরাড জমানায় এখানে বেকারত্ব সর্বোচ্চ।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “তৃণমূল যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফল প্রকাশের ১ মাসের মধ্যে উই কার্ড চালু হবে এখানে। যার মাধ্যমে ১ হাজার টাকা মাসিক ও বার্ষিক ১২ হাজার টাকা পাবেন এখানকার মহিলারা।”
এছাড়াও বিজেপি ও এনপিপিকে সরাসরি আক্রমণ শানিয়ে অভিষেক বলেন, “মেঘালয়ে উন্নয়ন নেই, এমন একটা মুখ্যমন্ত্রী যে দিল্লি আসামের কাছে মাথা নত করে রয়েছে। এখানে রাস্তা নেই, হাসপাতালে ডাক্তার নেই, স্কুলে শিক্ষক নেই। যারা রাজ্যের উন্নয়ন, শিক্ষা, আইন শৃঙ্খলা, স্বাস্থ্যকে রশাতলে পাঠিয়েছে তাদের ২৭ তারিখ রসাতলে পাঠাতে হবে। বাংলা দিল্লির কাছে মাথা নত করেনি, মেঘালয় ছোট রাজ্য হতে পারে কিন্তু মাথানত করবে না। তৃণমূলে ভোট দেওয়ার অর্থ মেঘালয়ের সম্মান বজায় রাখা। অন্যরা ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের পর কেটে পড়ে কিন্তু তৃণমূল যা বলে তা করে।” এছাড়াও এদিনের জনসভা থেকে অভিষেক বলেন, মেঘালয় একটি রাজ্য অথচ এখানে একটা কোনও মেডিক্যাল কলেজ নেই। এখানকার পড়ুয়াদের ডাক্তারি পড়তে অন্য রাজ্যে যেতে হয়। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি তৃণমূল এখানে সরকার গড়লে জেলা ভিত্তিক হিসেবে অন্তত ১২ টা মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হবে।”
Be the first to comment