বিজেপি ট্রেন বাতিল করেছে তো কী হয়েছে, বিকল্প পথেই জব কার্ড হোল্ডাররা দিল্লি যাবেন। দিল্লিতে ২ ও ৩ অক্টোবর প্রতিবাদ কর্মসূচি হবেই। বঞ্চিতরা আজ, শনিবারই ৫০টি বাসে দিল্লি যাচ্ছেন। আরও মানুষ ইনডোরে এসেছেন। তাঁরাও বিকল্প পথে দিল্লি যাবেন। যার যত ক্ষমতা আছে প্রয়োগ করুক। আমিও থাকব এই মানুষগুলির সঙ্গে দিল্লিতে। যদিও আমার যখনই কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকে ঠিক সেই দিনগুলিতেই আমাকে ডেকে পাঠানো হয়। শুক্রবার রাতে নেতাজি ইনডোরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এভাবে বিস্ফোরক ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাফ কথা, যে কয়েক হাজার জব কার্ড হোল্ডার এখানে এসেছেন তাঁরা প্রত্যেকে বিকল্প উপায়ে দিল্লি পৌঁছবেন। সে ব্যবস্থা আমরা করছি। একইসঙ্গে এদিন বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যে যদি একজন গরিবের গায়েও হাত পড়ে তাহলে গণতান্ত্রিক ভাবে তার জবাব দেওয়া হবে। ছেড়ে কথা বলবে না তৃণমূল কংগ্রেস।
শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার পর নেতাজি ইনডোরে যান অভিষেক। ঘুরে দেখেন সব ব্যবস্থাপনা। এরপর অরূপ বিশ্বাস, ব্রাত্য বসু, তাপস রায়ের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন অভিষেক। সাংবাদিকরা ট্রেন বাতিল নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, বিজেপি কতোটা ভয় পেলে এটা করতে পারে। এখানে যারা এসেছেন জবকার্ড হোল্ডাররা। তাদের ৮০ শতাংশ মহিলা। তাদের অনেকে বাচ্চা কোলে নিয়ে এসেছেন। এরা প্রত্যেকে দু’বছর ধরে ১০০ দিনের কাজের টাকা, বাংলা আবাস যোজনার টাকা পাননি। অভিষেকে সংযোজন, বিজেপি বলছে দুর্নীতি হয়েছে। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই যে দুর্নীতি হয়েছে, যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। ট্রেন বাতিল করবে কেন? এবার মানুষকেই ঠিক করতে হবে তারা মাথা নিচু করে বিজেপির ফোনে টাকা ছাড়াবে নাকি বোতাম টিপে বিজেপিকেই সরাবে। আগামী দিন মানুষই এর জবাব দেবে। একুশে নির্বাচনে যা ছিল চব্বিশে তার থেকে আরও খারাপ হবে বিজেপি ফল। অভিষেকের কথায়, বাংলাই পথ দেখাবে। এরা গরিব মানুষের হকের টাকা ছিনিয়ে নিয়ে সেন্ট্রাল ভিস্তা বানাবে। ৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করে বিমান কিনবে। দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ করে নতুন সংসদভবন হবে আর গরিব মানুষের হকের টাকা দেবে না, তা হতে পারে না। অভিষেকের প্রশ্ন, যারা কুৎসা, অপপ্রচার করছে তারা এই গরিব মানুষগুলোকে নিয়ে এত ভীত-সন্ত্রস্ত কেন? কীসের ভয় এত? আসলে এই কর্মসূচিকে আটকাতেই বিজেপির এত ফন্দিফিকির। আমরা বারবার চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও আমাদের রামলীলা ময়দানের দেয়নি। রাজঘাটের এখনও কোনও খবর নেই। শুক্রবার সন্ধ্যাতেই গিরিরাজ সিংয়ের দফতর থেকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়েছে, তিনি দেখা করতে পারবেন না। তিনি নাকি দিল্লিতেই নেই। কিন্তু দেখা করতেই হবে। মন্ত্রী নেই তো কী হয়েছে, প্রতিমন্ত্রী দেখা করবেন। বাংলার হকের টাকা দিতেই হবে। সাফ কথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের। ট্রেন বাতিলের প্রসঙ্গ টেনে অভিষেক একটি ই-মেল দেখিয়ে বলেন, প্রচার করা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস নাকি ট্রেনের জন্য আবেদনই করেনি। যদি তাই হবে তাহলে টাকা ফেরতের যে কথা রেল বলেছে তা হয় কী করে? তার মানে টাকা নিয়েছে বলেই ফেরতের প্রসঙ্গ আসছে। যত ক্ষমতা প্রয়োগ করুক না কেন গরিব মানুষরা দিল্লি যাবেই। ২ ও ৩ অক্টোবর প্রতিবাদ কর্মসূচি হবেই। চ্যালেঞ্জ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
Be the first to comment