মনমোহনের প্রয়াণে দেশের ‘রোল মডেল’দের ‘নীরব’ থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন অভিষেক

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা :- ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডাক্তার মনমোহন সিংয়ের প্রয়াণে কেন মুখে কুলুপ দেশের ‘তথাকথিত আইকন’দের? সমাজমাধ্যমে এই প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

একদিকে যখন মনমোহনের শেষকৃত্যের স্থান নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির আকচা-আকচি চরমে উঠেছে, ঠিক সেই সময়েই রবিবার দুপুরে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন অভিষেক। তার ওই পোস্টে ‘ক্রীড়া এবং চলচ্চিত্র জগতের একাংশ মনমোহনের প্রয়াণে ‘নীরব’ বলে মনে করছেন অভিষেক। সরাসরি কারও নামোল্লেখ করেননি তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু ‘তথাকথিত আইকন’রা কেন্দ্রের বিরাগভাজন হওয়ার ভয় পাচ্ছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
এদিন অভিষেক তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “খেলাধুলা ও চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ নীরবতা দেখে হতবাক ও মর্মাহত হতে হয়। যাঁদের ‘আদর্শ’ হিসেবে উদযাপন করা হয়, তাঁদের এই নীরবতা অস্বস্তিকর প্রশ্ন তুলে ধরে তাঁদের অগ্রাধিকার, দায়িত্ব ও সততার বিষয়ে। এই নীরবতার পিছনে সরকারের প্রতিক্রিয়ার ভয় কাজ করছে, কারণ জাতীয় ইস্যু নিয়ে মুখ না খোলা এখন অনেক তথাকথিত ‘আইকন’-এর কাছে একটি নিয়মে পরিণত হয়েছে।
এই উদাসীনতার ধারা নতুন নয়। কৃষক আন্দোলন, সিএএ-এনআরসি আন্দোলন এবং মণিপুর সংকটের সময়ও এঁরা চুপ ছিলেন। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির প্রতি তাঁদের নীরবতা সাধারণ মানুষের সংগ্রামের প্রতি একটি গভীর বিচ্ছিন্নতাকে স্পষ্ট করে তোলে। জনসাধারণের ভালোবাসা কাজে লাগিয়ে এঁরা তাঁদের সম্পদ ও খ্যাতি গড়ে তুলেছেন, অথচ জাতি যখন তাঁদের ন্যূনতম নৈতিক অবস্থানের প্রয়োজন, তখন তাঁরা সরে যান।
এদিন তিনি শেষে পরামর্শ দিয়ে লেখেন, “নতুন বছরের শুরুতে আমাদের ভেবে দেখা উচিত যে আমরা কাদের আদর্শ হিসেবে দেখি। যারা নিজেদের ক্যারিয়ার ও স্বাচ্ছন্দ্যকে সাহসিকতা ও দায়বদ্ধতার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন, তাঁদের গ্লোরিফাই করা বন্ধ করা দরকার। বরং আমাদের সম্মান জানানো উচিত এবং সমর্থন করা উচিত যাঁরা সত্যিকারের অবদান রাখেন আমাদের দেশ ও সমাজের জন্য—আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামী, সৈনিক এবং বৃহত্তর স্বার্থে ত্যাগ স্বীকারকারী ব্যক্তিদের। চলুন আমাদের শক্তি ও সম্পদ অর্থবহ কাজে ব্যয় করি: একটি শিশুর শিক্ষায় সাহায্য করা, একটি প্রয়োজনীয় পরিবারকে খাবার সরবরাহ করা, অথবা কারো জীবনকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে সহায়তা করা।
১৪০ কোটির শক্তি অপরিসীম। যাঁদের আমরা আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করি, তাঁদের থেকে সততা ও দায়বদ্ধতা দাবি করার সময় এসেছে। আসুন, নতুন বছর ২০২৫ আমাদের সম্মিলিত চেতনায় পরিবর্তন আনে—ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও জাতির কল্যাণের জন্য যারা অবিচল, তাঁদের মূল্যায়নের দিকে।”
উল্লেখ্য, অভিষেকের এই পোস্ট শেয়ার করেছেন শিবসেনা (ইউবিটি) সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী। অভিষেকের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে প্রিয়াঙ্কার বক্তব্য, ‘যথার্থই বলেছেন।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*