রোজদিন ডেস্ক :-
মধ্যবিত্ত নাগরিকের জন্য সুখের খবর। এবার প্রবীণদের জন্য স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে পুরোপুরি জিএসটি ছাড় মিলতে চলেছে। পাশাপাশি জীবন বিমার টার্ম পলিসি থেকেও উঠতে চলেছে জিএসটি। অন্যান্য ক্ষেত্রে ৫ লক্ষ পর্যন্ত জিএসটি ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে শনিবার মন্ত্রিগোষ্ঠীর জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে। উল্লেখ্য, এই বিষয়ে প্রথম দাবি তুলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দাবিকেই এদিন মান্যতা দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে ঠিক হয়েছে, প্রস্তাবমতো স্বাস্থ্যবিমা ও জীবনবিমার প্রিমিয়ামে দিতে হওয়া জিএসটি প্রবীণ নাগরিকদের দিতে হবে না। প্রবীণ নাগরিক ছাড়া ৫ লক্ষ টাকা কভারেজের প্রিমিয়ামের স্বাস্থ্যবিমায় অন্যদের ছাড়ের কথাতেও রাজি হয়েছেন মন্ত্রিগোষ্ঠীর সদস্যরা। যদিও চূড়ান্ত নেওয়া হবে জিএসটি কাউন্সিলের পরবর্তী বৈঠকে। ৫ লক্ষের বেশি কভারেজের স্বাস্থ্যবিমায় ১৮ শতাংশ জিএসটি চালু থাকবে বলে একমত হয়েছে মন্ত্রিগোষ্ঠী।
গত মাসে বসা জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে এই মন্ত্রিগোষ্ঠী গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। মন্ত্রিগোষ্ঠীর আহ্বায়ক বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরি বলেন, সকল সদস্যই মানুষের উপর থেকে অতিরিক্ত বোঝা কমাতে চেয়েছেন। বিশেষত প্রবীণ নাগরিকদের জন্য এই অতিরিক্ত করে বোঝা খুবই কষ্টদায়ক হচ্ছিল। আমরা একটি রিপোর্ট কাউন্সিলের কাছে জমা দেব। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী জিএসটি কাউন্সিলই। উল্লেখ্য, ১৩ সদস্যের এই মন্ত্রিগোষ্ঠীতে ছিলেন উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, কর্নাটক, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, গোয়া, গুজরাত, মেঘালয়, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু এবং তেলঙ্গানার মন্ত্রীরা।
স্বাস্থ্য ও জীবনবিমার প্রিমিয়ামে ১৮ শতাংশ জিএসটি মকুবের বিষয়ে কাউন্সিল গত বৈঠকেই ঐকমত্যে পৌঁছালেও পরবর্তী বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হতে চলেছে। ৫৪-তম জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে প্রায় সকল সদস্যই স্বাস্থ্য ও জীবনবিমা ক্ষেত্রে ১৮ শতাংশ কর মকুবের প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলেন। ফলে, পরবর্তী বৈঠকে যদি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে তা দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির কাছে এক বিরাট স্বস্তির বিষয় হবে। কারণ প্রিমিয়ামের সঙ্গে দেয় মোট অর্থের পরিমাণ অনেকটা লাঘব হবে।
প্রসঙ্গত, গত আগস্টেই জীবন বিমা এবং স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে ১৮ শতাংশ জিএসটি প্রত্যাহারের দাবি তুলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটের পর এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও দিয়েছিলেন তিনি। কিছুটা হুঙ্কারের সুরেই বলেছিলেন, জিএসটি প্রত্যাহার না হলে রাজপথে নামতে বাধ্য হবেন। এক্স হ্যান্ডলে এক পোস্টে মমতা লেখেন, “এই জায়গায় জিএসটি নেতিবাচক। যেহেতু মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে অনভিপ্রেত প্রভাব পড়ছে।” এর পরই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দেন, “কেন্দ্রীয় সরকার যদি এই জনবিরোধী জিএসটি প্রত্যাহার না করে, তা হলে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।”
অন্যদিকে, গত ২৮ জুলাই জীবনবিমা এবং স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়ামে ১৮ শতাংশ জিএসটি প্রত্যাহারের দাবিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলাকে চিঠি লিখেছিলেন তাঁরই সতীর্থ কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নীতীন গড়করি। রাজ্যসভার অধিবেশনে ওই দাবিকে সমর্থন করে তৃণমূল। সূত্রের খবর, শনিবার, ১৯ অক্টোবর জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে স্পর্শকাতর প্রবীণদের স্বাস্থ্য বিমা এবং জীবন বিমায় জিএসটি ছাড়ের বিষয়ে একমত হন মন্ত্রিগোষ্ঠী। সব ঠিক থাকলে চলতি মাসেই প্রবীণদের জন্য স্বাস্থ্য বিমা এবং জীবন বিমায় পুরোপুরি জিএসটি ছাড়ের বিষয়টি পাকা হতে পারে।
Be the first to comment