এর আগেও দুবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন মডেল-অভিনেত্রী বিদিশা দে মজুমদার। তাঁর একাধিক বান্ধবী এমনটাই জানিয়েছেন। যদিও সেই বান্ধবী এবং সহকর্মীদের বাধায় তিনি শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে আসেন। তবে বুধবার আর শেষরক্ষা হল না। নাগেরবাজার ফ্ল্যাটে উদ্ধার হয় উঠতি অভিনেত্রী বিদিশার ঝুলন্ত দেহ।
কয়েকদিন আগেই কসবা থানা এলাকার গরফায় একইভাবে টেলি অভিনেত্রী পল্লবী দে-র ঝুলন্ত মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। সেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত এখনও চলছে। ওই ঘটনায় ধৃত অভিনেত্রীর লিভ ইন পার্টনার সাগ্নিক চক্রবর্তীকে বৃহস্পতিবারই ফের আদালতে তোলা হয়। দুটি ঘটনার ক্ষেত্রেই প্রেম ঘটিত বিষয় জড়িত রয়েছে। পর পর দুটি ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, কেন এই অল্পবয়সি অভিনেত্রীরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে?
পেশাগত অনিশ্চয়তা নাকি মানসিক অবসাদ? নাকি প্রেমে প্রত্যাখ্যানের কারণে আত্মহত্যা? এমন একাধিক প্রশ্ন উঠছে নাগেরবাজারে মডেল ও অভিনেত্রী বিদিশার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায়। বুধবার রাতে প্রকাশ্যে আসে মডেল ও উঠতি অভিনেত্রী বিদিশার অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর। জানা গিয়েছে, মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেও সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাক্টিভ ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার গভীর রাতে ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচার ও কভার ফোটো পরিবর্তন করেন। এমনকী সাম্প্রতিক এক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার ছবিও পোস্ট করেন তিনি। সেই ছবির ক্যাপশনে লেখেন, যখন আমি নিজের প্রেমে পড়ি। প্রশ্ন কী এমন ঘটল যে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন এই তরুণী?
বুধবার নাগেরবাজারের একটি ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় মডেল বিদিশার দেহ। ঘর থেকে মিলেছে একটি সুইসাইড নোটও৷ সেখানে আত্মহত্যার জন্য বিদিশা কাউকেই দায়ী করেননি। কিন্তু তাঁর ফোন ঘেঁটে বেশ কিছু তথ্য পুলিসে হাতে এসেছে। সূত্রের খবর, প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন চলছিল। তাই বিদিশার মোবাইল দুটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস। তদন্তকারীরা বিদিশার বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পুলিসের হাতে এসেছে। তাতে মৃত্যুর কারণ হিসাবে আত্মহত্যার কথাই বলা হয়েছে। তবু পুলিস তদন্তে অন্যান্য বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখছে। এছাড়া তাঁর বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলছেন তদন্তকারীরা।
পুলিস সূত্রে খবর, মৃত্যুর কিছু আগেই বান্ধবী দিয়া দাসের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট করেন বিদিশা। একাধিকবার মেসেজ করেছিলেন তাঁকে। সেই চ্যাট দেখলেই বোঝা যায়, প্রেমিক অনুভব বেরাকে বিদিশা কতটা ভালোবাসতেন। বান্ধবী দিয়া জানান, অনুভব বেরা নামে ওই যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন বিদিশা। অনুভবকে ভীষণ ভালোবাসতেন তিনি। কিন্তু কয়েকদিন আগে বিদিশা জানতে পারেন, অনুভব অন্য একটি সম্পর্কে জড়িয়েছেন। তারপর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। বান্ধবীকে হোয়াটসঅ্যাপে বিদিশা লেখেন, বাবা মায়ের থেকেও বেশি ভালোবাসতাম অনুভবকে। সূত্রের খবর, পুলিস অনুভবকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে।
Be the first to comment