আফগানিস্তানের শাসনভার দখল করার পর দিন সময় কেটেছে। আর তালিবানও ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরোতে শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে তারা নিজেদের উদারপন্থী রূপ বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছিল। মেয়েদের কাজে বেরোনর, স্কুলে যাওয়ার, সংবাদ পরিবেশনের অনুমতিও দিয়েছিল। কিন্তু নৃশংসতা যে তালিবানি সেনার রক্তে মিশে গিয়েছে, বৃহস্পতিবার তার জলজ্যান্ত প্রমাণ পাওয়া গেল আফগানিস্তানের অসদাবাদ শহরে। আফগান স্বাধীনতা দিবস পালন করতে চেয়ে মিছিল বের করায় তাতে নির্বিচারে গুলি চালাল তালিবানিরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।
১৯১৯ সাল থেকে এই ১৯ অগস্ট দিনটিকেই স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে আফগানিস্তান। তৃতীয় অ্যাংলো- আফগান যুদ্ধ শেষে ব্রিটিশদের কাছে যখন জয় পেয়েছিল আফগানিস্তান, ১৯১৯ সালের সেই দিন থেকেই আফগানিস্তানের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ১৯ অগস্ট দিনটিকে। যথারীতি এই দিনটি পালন করতে অসদাবাদ শহরে তালিবানি নিষেধাজ্ঞা উড়িয়েই আফগানিস্তানের জাতীয় পতাকা নিয়ে মিছিল বের করেন কয়েকশো আফগান। শতাধিক সংখ্যায় মহিলা-পুরুষ মিলে তালিবানের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেই স্বাধীনতা দিবস পালন করেন। তখনই মিছিল লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে ছোটাছুটি শুরু হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও ঠিক কত সংখ্যক মানুষ মারা গিয়েছেন তা জানা যায়নি।
তবে কেবল অসদাবাদ শহরে নয়, আফগানিস্তানের জলালাবাদ এবং পঞ্জশির এলাকাতেও তালিবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্রমশ বড় আকার ধারণ করছে। তবে সেখানে সংঘর্ষ বা হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তালিবানের পক্ষ থেকেও এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলা হয়নি। তবে যেভাবে তালিবানি নিষেধাজ্ঞা উড়িয়েই এ দিন দেশের নানা প্রান্তে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়েছে, তাতে তালিবানও যে মোটেই স্বস্তিতে থাকবে না, হলফ করে বলা যায়।
Be the first to comment