রাজ্য জুড়ে ফের পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু জুনিয়র ডাক্তারদের, ৮ ঘন্টা জিবি বৈঠক করে গভীর রাতে সিদ্ধান্ত

Spread the love

 

রোজদিন ডেস্ক :-

আরজি কর-কাণ্ডে নির্যাতিতার বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা-সহ একাধিক অভিযোগ তুলে ফের পূর্ণ কর্মবিরতির পথে হাঁটলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে শুরু হয়ে গেল জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি। জুনিয়র ডাক্তারদের সকলে তাকিয়ে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টে সোমবারের আরজি কর মামলার শুনানির দিকে। গত শনিবারের জিবি বৈঠকের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন, রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে পূর্ণ কর্মবিরতি করবেন তাঁরা। সোমবার গভীর রাত থেকে শেষ রাত পর্যন্ত চলা দীর্ঘ ৮ ঘণ্টার জিবি বৈঠকের পর সেই পথেই হাঁটলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। চিকিৎসকদের তরফ থেকে মোট দশ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে। সেই দাবিগুলি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

দাবিগুলি কী কী?
১। স্বচ্ছতার সঙ্গে দ্রুত নির্যাতিতার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
২। স্বাস্থ্য দফতরকে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের অক্ষমতা এবং দুর্নীতির দায় নিতে হবে। পাশাপাশি নারায়ণস্বরূপ নিগমকে স্বাস্থ্যসচিবের পদ থেকে অপসারণ করা।
৩। প্রতিটি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে কেন্দ্রীয় পদ্ধতিতে রোগীকে অন্যজায়গায় স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া চালু করা।
৪। প্রতিটি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে ফাঁকা বেডের সংখ্যা জানতে একটি করে ডিজিটাল মনিটর রাখা।
৫। প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কলেজভিত্তিক টাস্কফোর্স গঠন করা। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারদের নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকবেন। সিসিটিভি, ডাক্তারদের জন্য অন কল রুম, শৌচালয়, হেল্পলাইন নম্বর, প্যানিক বটন চালু করা।
৬। হাসপাতালগুলিতে পুলিশি নিরাপত্তা আরও বাড়াতে হবে। সিভিক ভলান্টিয়ারের বদলে পুলিশকর্মীদের দায়িত্বে রাখতে হবে। রাখতে হবে মহিলা পুলিশকর্মীও।
৭। হাসপাতালগুলিতে ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করা।
৮। প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে থ্রেট কালচারের সঙ্গে জড়িত যাঁরা, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে কেন্দ্রীয় স্তরে অনুসন্ধান কমিটি গঠন।
৯। মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। যেখান থেকে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। তার জন্য কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক ডাকতে মেডিক্যাল কলেজগুলিকে নির্দেশ দেওয়া।
১০। পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিল এবং পশ্চিমবঙ্গ হেল্‌থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগগুলির দ্রুত তদন্ত শুরু করা।
প্রসঙ্গত, সোমবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে সম্প্রতি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক নিগ্রহের প্রসঙ্গ ওঠে। রাজ্যের আইনজীবী দাবি করেন, বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে সেখানে। তবে সেই দাবি উড়িয়ে দেন জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং। প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “জুনিয়র ডাক্তাররা জরুরি পরিষেবা দিতে শুরু করেছেন।” প্রধান বিচারপতি এর পর প্রশ্ন করেন, “চিকিৎসকরা কি ওপিডি এবং আইপিডিতে যোগ দিয়েছেন?” আইনজীবী জয়সিং ফের উত্তর দেন, আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা জরুরি পরিষেবায় যোগ দিয়েছেন। ফের প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট করে বলেন, “আমি ওপিডি এবং আইপিডি সার্ভিসের কথা বলছি।” এর পর প্রধান বিচারপতি সাফ জানিয়ে দেন, ডাক্তারদের ওপিডি এবং আইপিডি সার্ভিসে যোগ দিতেই হবে। তার পরও ফের কর্মবিরতিতে জুনিয়র ডাক্তাররা।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*