সেনাবাহিনীতে অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে নিয়োগের প্রতিবাদে দেশজুড়ে অশান্তি চলছে। বিক্ষোভের মধ্যে পড়ে প্রকল্পে বেশ কিছু পরিবর্তনও আনা হয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। অগ্নিবীরদের বিজেপি পার্টি অফিসে সিকিউরিটির কাজে রাখা হবে, বলেছেন তিনি।
এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, শিবসেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদি। নিন্দা করেছেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধীও। অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে সেনায় নিয়োগ করলে চাকরিপ্রার্থীদের কাজের নিশ্চয়তা থাকবে কি না, সেই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে। উত্তরে তিনি বলেন, অগ্নিবীররা বিশেষ প্রশিক্ষণ পাবেন। চার বছর চাকরি করে বেরনোর পরে ১১ লক্ষ টাকা।
এছাড়াও সারাজীবন অগ্নিবীর হিসাবে নিজের পরিচয় দিতে পারবেন তাঁরা। এরপরেই বিতর্কিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, যদি বিজেপির অফিসে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করতে হয়, তাহলে অগ্নিবীরদেরকেই আগে সুযোগ দেওয়া হবে। এহেন মন্তব্য করার পরেই নিন্দায় সরব হন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। টুইট করে তিনি বলেন, দেশের যুবসমাজ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ছোট চোখে দেখবেন না। তারা দিন রাত পরিশ্রম করে সেনাবাহিনীর প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করে। দেশের সেবা করবে বলেই এত পরিশ্রম করে তারা। বিজেপি অফিসের বাইরে গার্ডের কাজ করার জন্য নয়।
শিবসেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদি বলেছেন, আমাদের সেনারা প্রশিক্ষণ দেবেন অগ্নিবীরদের, যেন তারা ভাল সিকিউরিটি গার্ড হতে পারে! সেনার উর্দিকে এইভাবে অপমান করা হচ্ছে।
প্রতিবাদ করেছেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধীও। টুইটে লিখেছেন,সারা পৃথিবী ভারতীয় সেনাবাহিনীর বীরত্বের কথা জানে। সেই সেনাকে একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে চৌকিদার হিসাবে রাখার কথা বলা হচ্ছে। অভিনন্দন! ভারতীয় সেনায় যোগদান করা মানে ভারতমাতার সেবা করা। আর পাঁচটা চাকরির সঙ্গে অনেক তফাত রয়েছে।
ক্রমাগত বিক্ষোভ চলতে থাকায় রবিবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ভারতীয় সেনার তিন বিভাগের প্রধান। আলোচনার পরে বেশ কিছু রদবদলের কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তারপরেই বিজেপি নেতার এহেন মন্তব্যে ফের বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে।
তবে এই বিতর্ক ছড়িয়ে পড়তেই সাফাই দিয়েছেন বিজয়বর্গীয়। আমি বলতে চেয়েছিলাম, অগ্নিবীররা প্রশিক্ষণ শেষ করে যে কাজেই যোগ দিতে চাইবেন, সেখানেই তাঁদের কাজে নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, টুইটারকে ‘টুলকিট গ্যাং বলে কটাক্ষ করে তিনি বলেছেন, টুলকিট গ্যাংয়ের সদস্যরা অযথা আমার কথাকে বিকৃত করেছে। তবে তাঁর সাফাইয়ের পরও এই বিতর্ক থামে কিনা, সেটাই এখন দেখার।
Be the first to comment