নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করে বারবার রাস্তায় নেমেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার আইন কার্যকর হয়ে যাওয়ার পর আরও বাড়িয়েছে আক্রমণের ঝাঁঝ। বিভিন্ন সভায় গিয়ে বারবার মমতা দাবি করছেন, মুসলিমদের বঞ্চিত করা হচ্ছে এই আইনে। ‘বর্ণ বৈষম্যের সিএএ’ বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। এবার সেই ইস্যুতেই মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া জবাব দিলেন অমিত শাহ। ‘অনুপ্রবেশে মদত দিচ্ছেন’ বলে মমতাকে সরাসরি আক্রমণ করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সম্প্রতি সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাগরিকত্ব আইনের ইস্যুতে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, “বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসবে, সেই দিন বেশি দূরে নেই।” মমতার উদ্দেশে তিনি বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত এমন একটি ইস্যুতে আপনি রাজনীতি করছেন। আপনি যদি এভাবে তোষণের রাজনীতি করতে থাকেন আর শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে না চান, তাহলে মানুষ আপনার পাশে আর থাকবে না।” অমিত শাহ আরও বলেন, ‘অনুপ্রবেশকারী ও শরণার্থীর মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না মমতা।’
বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের কোনও ক্ষতি করবেন না, এই ভাষাতেই মমতাকে কার্যত বার্তা দিয়েছেন শাহ। তিনি বলেন, রাজনীতি করার জন্য আরও অনেক প্লাটফর্ম আছে। শাহের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করছেন ভোটব্যাঙ্কের কথা ভেবে। সিএএ যে বাংলাতেও কার্যকর হবেই, সে কথা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছেন শাহ। পাশাপাশি এদিন সিএএ কখনও প্রত্যাহার করা হবে না, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সাফ জানিয়ে দিলেন এ কথা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সিএএ কখনও প্রত্যাহার করা হবে না। ভারতে নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার সার্বভৌম সিদ্ধান্ত এটি। এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরা কখনও আপোশ করব না।”
চলতি সপ্তাহের সোমবারই কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ কার্যকর করার নির্দেশিকা জারি করে। এরপরই বিরোধীরা সমালোচনার ঝড় তোলে। বিশেষ করে ইন্ডিয়া জোটের সদস্য একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা এই আইন কার্যকর হতে দেবেন না বলেছেন। এই তালিকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন রয়েছেন। ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে এই আইন প্রত্যাহার করা হবে বলেও তাঁরা দাবি করেছেন।
এ দিন বিরোধীদের কড়া জবাব দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বিরোধীরাও জানে তাদের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ইন্ডি জোট নিজেও জানে ওরা কখনও ক্ষমতায় আসবে না। বিজেপি সিএএ এনেছে, নরেন্দ্র মোদী সরকার এই আইন এনেছে। এই আইন প্রত্যাহার করা অসম্ভব। আমরা এই আইন নিয়ে দেশজুড়ে সচেতনতার প্রচার করব যাতে যারা এই আইন প্রত্যাহার করতে চায়, তারা কোনও সুযোগই না পায়।”
Be the first to comment