আজও মুক্তি পেলেন না শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খান ৷ তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি আজ ফের মুলতুবি করে দিল বম্বে হাইকোর্ট ৷ বৃহস্পতিবার ফের এই মামলার শুনানি হবে ৷ বিচারপতি সাম্বরে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ২.৩০টে নাগাদ এই মামলার শুনানি হবে ৷ আজ জামিন পাননি মাদক মামলায় ধৃত আরিয়ানের বন্ধু আরবাজ মার্চেন্ট ও মুনমুন ধামেচাও ৷
আইনজীবী মুকুল রোহতগি, অমিত দেশাই ও আলি কাশিফ খান দেশমুখের সওয়ালের জবাব বৃহস্পতিবার দেবেন বলে জানিয়েছেন অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অনিল সিং ৷ তিনি বলেছেন, আগামিকাল এক ঘণ্টার মধ্যে তিনি এনসিবি-র স্বপক্ষে নিজের বক্তব্য শেষ করবেন ৷
আজ আরবাজ মার্চেন্টের পক্ষে সওয়াল করে অমিত দেশাই বলেন, এটাকে একটা ষড়যন্ত্রের মামলা হিসেবে তুলে ধরে আদালতকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে ৷ আরবাজের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে এমন কিছু পাওয়া যায়নি, যা থেকে এনসিবি ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব সাজাচ্ছে ৷ যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের গ্রেফতার করার কারণ অবশ্যই জানানো উচিত বলে দাবি করেন দেশাই ৷
একই কথা বলেন আরিয়ানের আইনজীবী মুকুল রোহাতগিও ৷ তিনি তাঁর সওয়ালে বলেছেন, “অনুগ্রহ করে আরিয়ান খানের গ্রেফতারি মেমো দেখুন ৷ সংবিধানের ২২ নং ধারা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০ নম্বর ধারার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ৷ যিনি গ্রেফতার হচ্ছেন, তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে, এবং তিনি জামিন পেতে পারেন কি না, সবটা জানা তাঁর অধিকারের মধ্যে পড়ে ৷ নিজের ইচ্ছেমতো আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়ার অধিকারও তাঁর রয়েছে ৷”
মুনমুন ধামেচার পক্ষে সওয়াল করে আলি কাশিফ খান দেশমুখ বলেন, প্রমোদতরীতে তল্লাশি করে উদ্ধার হওয়া মাদকের সঙ্গে তাঁর মক্কেলের কোনও সম্পর্কই নেই ৷ মুনমুনকে বলির পাঁঠা করা হয়েছে বলে দাবি করেন দেশমুখ ৷ তিনি বলেন, মুনমুন একজন মডেল ৷ ২ অক্টোবর প্রমোদতরীর পার্টিতে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ৷ ঘরে ঢোকার ২-৩ মিনিটের মধ্যেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয় ৷ তবে সেখানে আরও দুজন ছিলেন ৷
দেশমুখের দাবি, “তল্লাশির সময় মুনমুনের থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি ৷ সৌম্য সিং-এর ব্যাগ থেকে দু প্যাকেট রোল করা কাগজ পাওয়া গিয়েছিল ৷ অথচ তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়নি এবং ছেড়ে দেওয়া হয় ৷” অন্যদের বিরুদ্ধে মামলাকেই মুনমুনের বিরুদ্ধে কপি-পেস্ট করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর আইনজীবী ৷ মঙ্গলবারও আরিয়ান খানের জামিনের আবেদনের মামলার শুনানি মুলতুবি করে দেয় বম্বে হাইকোর্ট ৷ আরিয়ানের হয়ে গতকাল সওয়াল করেন প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি ৷ শুরু থেকেই আরিয়ানের হেফাজত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি ৷
পাল্টা জবাবে এনসিবি বলে, এখনও পর্যন্ত হওয়া তদন্তে অবৈধ ভাবে মাদক সংগ্রহ, পরিবহণ ও সেবনে আরিয়ানের ভূমিকা লক্ষ্য করা গিয়েছে ৷ প্রাথমিক তদন্তের পর দেখা গিয়েছে যে, এই মামলায় অপর অভিযুক্ত তথা বন্ধু আরবাজ মার্চেন্টের থেকে মাদক সংগ্রহ করতেন আরিয়ান ৷
দু’পক্ষের সওয়াল জবাবের পর আরবাজ মার্চেন্টের আইনজীবী ও অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল তাঁদের বক্তব্য পেশের জন্য ৪৫ মিনিট করে সময় চাইলে আদালত শুনানি মুলতুবি করে দেয় ৷ এরপর আজ সেই শুনানি হলেও তাও সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই মুলতুবি করে দেয় আদালত ৷ ফলে আজও মুক্তি মেলেনি আরিয়ান খানের ৷ তিনি জামিন পাবেন কি না, তা জানা যেতে পারে বৃহস্পতিবার ৷
Be the first to comment