শাসক দলের ‘মধু পান’ করাই লক্ষ্য। তাই এখন তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন অনেকে। দলীয় কর্মীসভায় ফের বিস্ফোরক রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার মাসড়া এলাকার তৃণমূল কর্মী সম্মেলনে সকলকে সচেতনতারও পাঠ দিলেন তিনি। উল্লেখ্য, এর আগে গত সপ্তাহে কর্মীদের সৎ থাকার পরামর্শ দেন। দাবি করেন, “বুকে হাত দিয়ে বলতে হবে আপনারা সৎ কিনা।”
এদিন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখন রাজ্যে তৃণমূলের ঢেউ এসেছে। এখন সবাই তৃণমূল। অথচ একটা সময় ছিল যখন দল ক্ষমতায় আসেনি তখন অনেকেই তৃণমূলের পতাকা হাতে নিতে ভয় পেত। আর এখন রাজ্যে ভরা সংসারে অনেকে শাসকদলের মধু পান করতে, তৃণমূলের পতাকা নিতে চাইছে।” তিনি আরও বলেন, “আমি যখন নির্বাচনে দাঁড়াতাম ২০০১ সালে, তখন আমাদের ভাবনা থাকত মাসড়া এলাকা থেকে ভোটের অঙ্কে কতটা ভোট পাব। মানে কতটা বিরোধীদের ভোট কাটবে। তখন গোটা এলাকায় ৪ হাজার ভোট ছিল। দেখতাম আপনাদের ভোটেই আমরা জয়ী হয়েছি।”
অতীতের সংগ্রাম নিয়ে স্মৃতিচারণায় তিনি আরও বলেন, “আপনারা দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেছেন। সংগ্রাম করেছেন। আপনারাই ভোট দিয়ে বিধায়ক, সাংসদকে এখান থেকে নির্বাচিত করেছেন। যেদিন আপনারা তৃণমূলের পতাকা নিয়ে লড়াই শুরু করেছিলেন, সেদিন অনেকেই এই পতাকাটা ধরতে পারেননি। তারা ভেবেছিলেন তৃণমূল আবার আছে নাকি? কত বদনাম। কত গালিগালাজ। তখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হননি। ক্ষমতায় আসেননি। পরবর্তীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ক্ষমতায় আসলেন, সরকার হল, তখন অন্য দল থেকে সেইসব নেতারা মমতাদির পায়ে ধরে দলে ঢুকল। এ কারণে তাদের আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে দলেই চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। নাম না করে কাদের উদ্দেশে একথা বললেন তিনি, তা নিয়ে চলছে কানাঘুষো। তাঁর ঘনিষ্ঠ রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের সভাপতি আনারুল হোসেন বগটুই কাণ্ডে অভিযুক্ত হয়ে জেলবন্দি। তার জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সৈয়দ সিরাজ জিম্মিকে। তারপর থেকেই প্রত্যেক কর্মীসভায় দলের আদর্শ, পুরনো দিনে দলের সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে কর্মীদের একজোট হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বর্তমানে অসুস্থ। ঠিক এই সময়ে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংগঠনিক দৃঢ়তা দেখে অনেকে অন্য অঙ্কও কষতে শুরু করেছেন।
Be the first to comment