অসম-মিজোরাম সীমান্তে ঘংঘর্ষের মধ্যে মৃত্যু হল ছয় পুলিশ আধিকারিকের। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন পুলিশকর্মী এবং সাধারণ মানুষের। তবে নাম গোপন রাখার শর্তে শিলচর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ৩৬ জন ভর্তি আছেন। এয়ারগানের এবং পাথর ছোড়ার জেরে তাঁরা আহত হয়েছেন। তবে কারও অবস্থা গুরুতর নয়।
সোমবার সন্ধ্যায় টুইটারে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে সংবিধান স্বীকৃত অসম-মিজোরাম সীমান্ত রক্ষার সময় অসমের পুলিশের ছ’জন বীর জওয়ান নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীরভাবে সমবেদনা জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, দিনকয়েক ধরেই অসম-মিজোরাম সীমান্তের পরিস্থিতি রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে আছে। তারইমধ্যে কাছার জেলার লায়লাপুরের কাছে সীমান্ত রীতিমতো যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে ওঠে। ছোড়া হতে থাকে পাথর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়া হয়। এয়ারগান থেকে ছোড়া হয় গুলি।
স্থানীয়দের দাবি, সকালে নিজেদের রাজ্যের ভূখণ্ডের মধ্যে একটি ছাউনি তৈরি করছিল অসম পুলিশ। সেই ঘটনাকে ঘিরে ১১ টা ৩০ মিনিটে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। জড়ো হয়ে যান হাজার-হাজার মানুষ। অসম এবং মিজোরাম পুলিশের মধ্যে আলোচনার সময় মিজোরামের একদল লোক পাথর ছুড়তে শুরু করেন। পালটা পাথর ছোড়েন অসমের একদল ব্যক্তিও। রীতিমতো রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান প্রশাসন এবং পুলিশের শীর্ষকর্তারা।
কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসা তো দূর অস্ত, রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। অভিযোগ, বিকেল ৩ টে ৪৫ মিনিট নাগাদ মিজোরামের দিক থেকে টিয়ার গ্যাসর শেল এবং এয়ারগানের গুলি ছোড়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, দু’পক্ষেরই একাধিক গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। কমপক্ষে ২৫ জন পুলিশ আধিকারিক এবং ২০ জন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন।
এরইমধ্যে মিজোরামের তরফে বিবৃতি জারি করে অসম পুলিশের বিরুদ্ধে দায় চাপানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালছামলিয়ানার দাবি, সকাল সাড়ে ১১ টা ৩০ মিনিট নাগাদ মিজোরামের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছিলেন অসম পুলিশের ২০০ জন আধিকারিক। জোর করে সিআরপিএফের পোস্ট টপকে যান। জাতীয় সড়ক দিয়ে যাওয়া গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। সেই ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যেতে শুরু করেন কোলাসিব জেলার ভাইরেংতে টাউনের বাসিন্দারা। তাঁদের উপর লাঠি চালায় অসম পুলিশ। ছোড়া হয় টিয়ার গ্যাস। তার জেরে আহত হন অনেক সাধারণ মানুষ।
বিবৃতিতে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, মিজোরাম পুলিশকে লক্ষ্য করে মুহুর্মূহূ টিয়ার গ্যাসের শেল এবং গ্রেনেড ছোড়া হয়। বিকেল ৪ টে ৩০ মিনিট নাগাদ গুলিও চালায় অসম পুলিশ। পালটা মিজোরাম পুলিশও গুলি চালায় বলে দাবি করা হয়েছে।
Be the first to comment