কোথাও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, কোথাও সঠিক পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না ! তার উপর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নানা বিধিনিষেধ ! খরচের বহর বেড়েই চলেছে দিনের পর দিন ! এই ধরণের নানা ঝামেলার জেরে আগামী বছর মার্চ মাসের মধ্যে দেশের ৫০ শতাংশ এটিএম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
তেমনই সতর্কবার্তা শোনাচ্ছে কনফেডারেশন অফ এটিএম ইন্ডাস্ট্রি । সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট ছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনার আওতায় লক্ষ লক্ষ মানুষের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এটিএমের মাধ্যমে ভরতুকির টাকা তোলেন তাঁরা। সম্প্রতি এটিএম হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার আপগ্রেড এবং এটিএমে টাকা ভরা সংক্রান্ত নয়া বিধি চালু করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, যাতে খরচের বহর এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে। গোটা পদ্ধতি সুষ্ঠুভাবে চালাতে বছরে এই ইন্ডাস্ট্রির খরচ হয় প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা । অথচ এই বিপুল পরিমাণ খরচের সামান্য অংশই ব্যাঙ্কগুলির কাছ থেকে পাওয়া যায়।
আগামী বছর ফেব্রুয়ারি থেকে এটিএম পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকা হতে হবে। এই সংস্থার হাতে ৩০০ টি স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্যাশ ভ্যান থাকতে হবে। প্রতিটি ভ্যানের জন্য দুজন সশস্ত্র রক্ষী এবং দুজন রক্ষক (কাস্টডিয়ান) থাকতে হবে।
গাড়িতে জিপিএস এবং সিসিটিভি-র ব্যবস্থা থাকাও বাধ্যতামূলক। এতেই দুশ্চিন্তা বেড়েছে এটিএম পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির । তাদের মতে, এত কিছু মানতে গেলে খরচের পরিমাণ একধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যাবে । সবদিক সামলানো সম্ভব হবে না। তাই এই মুহূর্তে এটিএম পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া অন্য উপায় দেখছেন না তাঁরা ।
এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ২ লক্ষ ৩৮ হাজার এটিএম রয়েছে, যার মধ্যে ব্যাঙ্ক লাগোয়া নয় এমন ১ লক্ষ এটিএম এবং ১৫ হাজারের বেশি হোয়াইট লেভেল এটিএম বা ব্যাঙ্ক ছাড়া অন্য আর্থিক সংস্থার এটিএম পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এতগুলি এটিএম একসঙ্গে বন্ধ হয়ে গেলে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়বেন। সহজে লেনদেনের সুযোগ হারাবেন কোটি কোটি মানুষ। দেশের অর্থনীতিতেও তার গুরুতর প্রভাব পড়বে। চাকরি হারাবেন বহু মানুষ।
Be the first to comment