ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপের জের? কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা ট্রুডোর

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা :- কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করলেন জাস্টিন ট্রুডো। একইসঙ্গে তাঁর দল লিবারেল পার্টির প্রধান হিসেবেও পদত্যাগ করেছেন তিনি। ৯ বছর ধরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন ট্রুডো। এই সময়টায় ক্রমেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে কানাডার। ট্রুডোর খলিস্তান প্রেমের কারণে ঘরে বাইরে সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হয়েছে তাঁকে। অভিযোগ, তাঁর আমলে কানাডা থেকে ভারত বিদ্বেষী কার্যকলাপ চালিয়ে গিয়েছে খলিস্তানি জঙ্গিরা। আক্রান্ত হয়েছে হিন্দু মন্দির। হামলা হয়েছে ভারতীয় কনসুলেটেও। খলিস্তানি কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের বদলে তাতে মদত জুগিয়েছেন ট্রুডো। তাঁর আমলেই কানাডার মাটিতে ফুলেফেঁপে ওঠে নিষিদ্ধ ‘শিখস ফর জাস্টিস’ ও ‘বব্বর খালসা’র মতো খলিস্তানি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি।

তবে সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকে খলিস্তান টাইগার ফোর্সের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকে কেন্দ্র করে। ট্রুডো দাবি করেন, কানাডার মাটিতে এই হত্যায় হাত রয়েছে ভারতের। এই অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানায় ভারত। কিন্তু নিজের বক্তব্যে অনড় ছিলেন ট্রুডো। একাধিক ভারতীয় কূটনীতিক এমনকি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে দেয় ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন কানাডার সরকার।  যদিও এর সমর্থনে কোনও প্রমাণ তারা দাখিল করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত কানাডার মধ্যেই ট্রুডোর বিরুদ্ধে ক্ষোভ চরমে ওঠে। এমনকি দলও ট্রুডোর  পাশে দাঁড়ায়নি। গত কয়েকদিন ধরেই ট্রুডো ইস্তফা দিতে পারেন এমন সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছিল। অবশেষে সেই সম্ভাবনাই সত্যি হল।
এদিকে, ট্রুডোর এই সিদ্ধান্তের ফলে কানাডার সংসদের অধিবেশন নির্দিষ্ট সময় বসবে না বলে জানিয়েছেন কানাডা প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক। তিনি জানান, আগের সিদ্ধান্ত অনুসারে কানাডার সংসদের অধিবেশন বসার কথা ছিল জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ থেকে। এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে সংসদের অধিবেশন বসবে মার্চ মাসের ২৪ তারিখ থেকে। তার মানে নিজেদের নেতা নির্বাচন করতে প্রায় দু’মাস সময় পেয়ে যাবে ট্রুডোর দল।
কানাডার পার্লামেন্টের হাউস অফ কমন্সে মোট ৩৩৮টি আসনের মধ্যে লিবারেল পার্টির ১৫৩ জন এমপি রয়েছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য লিবারেল পার্টির ১৭০টি আসনের প্রয়োজন। কয়েক মাস আগে ট্রুডোর সরকারের ‘বন্ধু’ খালিস্তানিপন্থী এমপি জগমিত সিংয়ের দল নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। তার পরই পরিস্থিতি চরমে ওঠে ৷ জোট ভেঙে যাওয়ার কারণে ট্রুডোর সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এরপর, ১ অক্টোবর সংখ্যাগরিষ্ঠতা পরীক্ষায়, ট্রুডোর দল লিবারেল পার্টি অন্য দলের সমর্থন পেয়ে যায় ৷ এর ফলে ‘ফ্লোর টেস্টে’ তখনকার মতো উতরে যান ট্রুডো। কিন্তু, চাপ এখনও কাটেনি ৷ এমনই আবহে দলের মধ্যেই সমর্থন না পেয়ে পদ ও প্রেসিডেন্ট দুই ছাড়লেন ট্রুডো।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*