অবশেষে শাপমোচন হল লিওনেল মেসির। আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে অবশেষে তিনি ট্রফি জয় করেন। ১৯৯৩ সালে শেষবার কোপা আমেরিকা কাপ জয় করেছিল লা অ্যালবেসেলেস্তের দল। ২০১৪ সালে এই মারাকানা স্টেডিয়ামেই জার্মানির কাছে ১-০ গোলে হেরে গিয়েছিলেন মেসিরা। সেই ক্ষত আজও দগদগে। অবশেষে আজ কাঙ্খিত জয়টা পেয়ে গেল আর্জেন্টিনা। ম্যাচের জয়সূচক গোলটা করেন অ্যাঞ্জেল দি মারিয়া।
মারাকানা স্টেডিয়ামে আয়োজিত কোপা আমেরিকার ফাইনাল ম্যাচের প্রথমার্ধেই ১-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। আজ লিও স্কালোনি একটা ট্রাম্প কার্ড খেলে দেন। এতদিন ধরে যে অ্যাঞ্জেল দি মারিয়াকে দ্বিতীয়ার্ধেরও কিছুক্ষণ পরে মাঠে নামাচ্ছিলেন, আজ তাঁকেই দলের প্রথমার্ধে দেখতে পাওয়া গেল। সেইসঙ্গে বেড়ে যায় আর্জেন্টিনার খেলার গতিও।
২২ মিনিটে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে এগিয়ে দিলেন দি মারিয়া। প্রায় মাঝমাঠ থেকেই লম্বা বল ভাসিয়ে দিয়েছিলেন রড্রিগো ডি’পল। কিন্তু, সেই বলটা রেনান লোদি ঠিক করে সংগ্রহ করতে পারেননি। বল যায় দি মারিয়ার কাছে। তিনি প্রথমে বাঁ পায়ে বলটাকে ধরেন। তারপর ছোট্ট একটা লব করে বলটা ব্রাজিলের জালে জড়িয়ে দেন। আজ দেশের হয়ে ১১১তম ম্যাচ খেলতে নেমেছেন দি মারিয়া। আর এই ম্যাচে তিনি ২১তম গোলটা পেয়ে গেলেন।
আজ দুটো দলেই একটু বেশি আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে। ১৫ মিনিটের মাথায় লিওনেল মেসি এবং নেইমার জুনিয়র দু’জনেই চোট পেয়ে মাঠের মধ্যে ছটফট করতে শুরু করেছিলেন। একদিকে ৪-৩-৩ ছকে যেখানে দল নামিয়েছেন স্কালোনি, সেখানেই তিতে ৪-২-৩-১ ছকে নিজেদের গুটি সাজিয়েছেন। আর্জেন্টিনার কিংবদন্তী ফুটবলার দিয়েগো মারাদোনার মৃত্যুর পর এই প্রথমবার কোনও মেজর টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলছে নীল-সাদা ব্রিগেড। এই ম্যাচ জিতে তারা যে ফুটবলের রাজপুত্রকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
এরপর শুরু হয়ে যায় দ্বিতীয়ার্ধের খেলা। ৫০ মিনিটে মেসি দি মারিয়াকে অসাধারণ একটা পাস বাড়ালেও, ব্রাজিলের রক্ষণে সেই শট প্রতিহত হয়ে ফিরে আসে। ৫২ মিনিটে ব্রাজিল প্রায় সমতা ফিরিয়েই ফেলেছিল। লুকাস পাকুয়েতার বাড়ানো বল থেকে রিচার্লিসন গোল করেন। কিন্তু, অফসাইডের কারণে সেই গোল বাতিল করে দেওয়া হয়।
দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলের আক্রমণের ঝাঁঝ অনেকটাই বেড়ে যায়। পরপর আক্রমণ তারা তুলে আনে। ৫৫ মিনিটে ফের শট রিচার্লিসনের। কিন্তু, আর্জেন্টিনার অতন্দ্রপ্রহরী এমিলিয়ানো মার্টিনেজ অবশেষে দারুণ একটা সেভ করেন। ৮৬ মিনিটে নেইমার একটা ফ্রি-কিক নিলেও, গ্যাব্রিয়েলের দুরন্ত একটা শট মার্টিনেজ অসাধারণ সেভ করলেন। ৮৭ মিনিটে নিশ্চিত একটা গোল মিস করলেন মেসি। বেশ কয়েকটা সুযোগ ব্রাজিল তৈরি করলেও অবশেষে আর কোনও গোল তারা করতে পারেনি।
Be the first to comment