দিনকয়েক আগে থেকেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এবার কোনওরকম হেঁয়ালি না করে বিএস ইয়েদুরাপ্পা জানিয়ে দিলেন, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে চলেছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে কে বসবেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি ৭৮ বছরের বিজেপি নেতা।
সোমবার বেঙ্গালুরুতে নিজের সরকারের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে তিনি বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি রাজভবনে যাব। আমার ইস্তফাপত্র জমা দেব। আমি দুঃখিত নই। আমি খুশি। ৭৫ বছর হয়ে গেলেও ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং জে পি নাড্ডার প্রতি কৃতজ্ঞতা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’
এমনিতে বিজেপির নীতি অনুযায়ী, ৭৫ বছরের ঊর্ধ্বে নেতাদের বড় পদে রাখা হয় না। কিন্তু লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের মধ্যে জনপ্রিয়তার ‘চাপে’ দু’বছর আগে ইয়েদুরাপ্পাকেই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসিয়েছিল বিজেপি। যে সম্প্রদায়ের হাতে ১৬-১৭ শতাংশ ভোটব্যাঙ্ক আছে। কিন্তু ক্রমশ বিজেপির অন্দরে ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে ক্ষোভের মাত্রা বাড়তে থাকে। তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন কর্নাটক বিজেপি নেতাদের একাংশ। ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া ইয়েদুরাপ্পা দিল্লিতে গিয়েছিলেন। সেখানে মোদী, শাহ এবং নাড্ডাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেইসময় পদত্যাগের কোনও সম্ভাবনাই নেই বলে জানিয়েছিলেন।
কিন্তু ক্রমশ তাঁর উপর চাপ বাড়তে থাকে। তার জেরে দু’দিন পরেই কিছুটা সুর নরম করেন লিঙ্গায়েতের সম্প্রদায়ের ‘মুখ’ ইয়েদুরাপ্পা। গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘আমার উপর অপরিসীম আস্থা আছে অমিত শাহ এবং দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার। আপনারা জানেন যে ৭৫ বছরের ঊর্ধ্বে কাউকে কোনও পদে বসায় না দল। কিন্তু আমার কাজের বিবেচনা করে আমায় ৭৮ বছর পর্যন্ত ক্ষমতা থাকার সুযোগ দিয়েছেন। দলকে শক্তিশালী করা এবং আবারও আমাদের সরকারকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনাই হল আমার লক্ষ্য।’
যদিও লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের কয়েকজন নেতা রীতিমতো হুঁশিয়ারি দেন, ইয়েদুরাপ্পাকে সরিয়ে দিলে বিজেপিকে ‘ফল’ ভুগতে হবে। সেই হুমকির মুখে অবশ্য পিছু হটেনি বিজেপি। বরং ইয়েদুরাপ্পার মুখ দিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা করিয়ে নিয়েছে।
Be the first to comment