সম্প্রতি বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি করেছে সরকার। সেই নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বিজেপি বিরোধী দলগুলি ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। সেই বিরোধিতার আবহেই কলকাতার বিএসএফ সদর দফতরে বৈঠকে বসতে চলেছে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। প্রত্যেক বছরই নিয়ম করে দুবার বৈঠকে বসে প্রতিবেশি দুই দেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী। এর মধ্যে কোনও নতুনত্ব না থাকলে বিএসএফকে নিয়ে তৈরি হওয়া সাম্প্রতিক বিতর্কের আবহে এই বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ।
জানা গিয়েছে, এবারে বৈঠকে দুপক্ষেরই ১০ জন করে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। সূত্রের খবর এবারে বৈঠকে পাচার রুখতে বিজিবিকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলবেন বিএসএফ কর্তারা। জানা গিয়েছে, বিএসএফ-বিজিবির বৈঠকে দুই দেশের সীমান্তের সুরক্ষা বজায় রাখার পাশাপাশি গরু পাচার, সোনা পাচার, জাল নোটের কারবার, বেআইনি অনুপ্রবেশের মত বিষয় গুলি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবন রয়েছে। গরু পাচার দুই দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অন্যতম সমস্যা কারণ। গরু পাচার থেকে পাওয়া অর্থ থেকে জঙ্গি ও নাশকতা মূলক কার্যকলাপকে ছড়িয়ে দেওয়া যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
গরু পাচারের ক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তকেই বেছে নেন পাচারকারীরা। এমনকি এই বেআইনি কার্যকলাপের ক্ষেত্রে দুই বাহিনীর আধিকারিকদেরও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। গরু পাচার যে জাতীয় নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করতে পারে সেই বিষয় আন্দাজ করেই বিজিবিকে এই বিষয়ে আরও বেশি সতর্ক থাকার আবেদন করতে পারে বিএসএফ, সূত্র মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে। এর পাশাপাশি বেআইনি অনুপ্রবেশ রুখতে বিজিবিকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানাবে বিএসএফ। তবে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের ওপর বিএসএফ যেন গুলি না চালায় সেই নিয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে আবেদন করা হতে পারেই বলেই জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিএসএফের এক্তিয়ার ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার বাড়িয়েছে কেন্দ্র। এই এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে না জানিয়েই তল্লাশি ও প্রয়োজনে সন্দেহভাজনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার ক্ষমতাও বিএসএফকে দেওয়া হয়েছিল। এই নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয় বিজেপি বিরোধী রাজ্য সরকার গুলি। ইতিমধ্যেই পঞ্জাব ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হয়েছে। দিল্লিতে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিকাল তাঁর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা রয়েছে। সেই সাক্ষাতে বিএসএফ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে যে তাঁর অমত রয়েছে সেকথা প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন মমতা। বিএসএফ নিয়ে রাজনীতির জল কোন দিকে গড়ায় সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।
Be the first to comment