৫ বছরে তৈরি হবে দেড় কোটি কর্মসংস্থান; আশাবাদী রাজ্য সরকার

Spread the love

বুধবার বিধানসভায় অসুস্থ অমিত মিত্রের পরিবর্তে বাজেট পেশ করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনিই ঘোষণা করেছেন, আগামী পাঁচ বছরে রাজ্যে দেড় কোটি কর্মসংস্থান তৈরির ব্যাপারে আশাবাদী রাজ্য সরকার। যদিও, কর্মসংস্থান তৈরির জন্য আলাদা কোনও প্রকল্প বা বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়নি বাজেটে।

কর্মসংস্থান নিয়ে ভোটের আগে একাধিকবার বিরোধীদের খোঁচা শুনতে হয়েছে রাজ্যকে। বস্তুত শুরু থেকেই রাজ্যের শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সম্ভবত সেকারণেই মমতাকে বলতে হয়েছিল, ‘এবারে ক্ষমতায় এলে ডবল ডবল চাকরি হবে।’

শুধু তাই নয় গত ৫ ফেব্রুয়ারি ভোটের আগে যে ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ করা হয়েছিল, তাতেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন আগামী ৫ বছরে দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সেই ঘোষণাই এদিন বাজেট বক্তৃতায় আরও একবার তুলে ধরেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন,”৫ ফেব্রুয়ারি পেশ করা অন্তর্বর্তী বাজেটের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরা আশাবাদী যে, আগামী ৫ বছরে ১.৫ কোটি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারব।”

এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানানঃ

  • ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে বাজেট বরাদ্দ।
  • গ্রাম এবং শহরে দু’শতাংশ স্ট্যাম্প ডিউটি কমেছে।
  • তফসিলি জাতি-জনজাতি মহিলাদের বছরে ১২,০০০ টাকার প্রকল্প শুরু শীঘ্রই’।
  • বাংলাদেশকেও টিকা দিতে পারছে না কেন্দ্র, চিন দিয়ে দিল।
  • ১৪,২২৫.৫৪ কোটি প্রাপ্য টাকা কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র।
  • একশো দিনের কাজে দেশে এক নম্বরে বাংলা।
  • ২০১৯-২০ তেও ১১ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাছাড়াও আমরা ৩৩ হাজার কোটি টাকা পাব কেন্দ্রের কাছ থেকে। অন্তত ৬০ হাজার কোটি টাকা থেকে আমরা বঞ্চিত।
  • আমফানে কেন্দ্রের কাছ থেকে ২২৫০ কোটি টাকার বেশি পাইনি। ইয়াসের পর ২১ হাজার কোটি টাকা চেয়েছিলাম, পেয়েছি মাত্র ৩০০ কোটি টাকা।
  • এত বঞ্চনা-বিরোধিতা সত্ত্বেও কেন্দ্রের তুলনায় বাংলা এগিয়ে।
  • কোভিড ম্যানেজমেন্টে ১৮৩০ কোটি, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের খাতে ২৫০ কোটি, লক্ষী ভাণ্ডার (নারী ও শিশু উন্নয়ন) প্রকল্পে ১০ হাজার কোটি, স্বাস্থ্য সাথী খাতে ১৯০০ কোটি।
  • টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সামাজিক সুরক্ষায় মোট বরাদ্দ করা হয়েছে ১৮,৬৫০ কোটি।
  • ২,১০৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ বিপর্যয় মোকাবিলা খাতে, ৭৭৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা বরাদ্দ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন খাতে, সুন্দরবন উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ ৫৭৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

কীভাবে দেড় কোটি কর্মসংস্থান হবে? বাজেটে পার্থবাবু সেভাবে ব্যাখ্যা না করলেও বাজেটের পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় কিছুটা ইঙ্গিত মিলেছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, দেউচা পাচামিতে ১ লক্ষ মানুষের কাজ হবে। রঘুনাথপুরে ৭২ হাজার কোটির বিনিয়োগ এসেছে। তাতে দুই থেকে আড়াই লক্ষ মানুষের কাজ হয়েছে। এছাড়াও সিলিকন ভ্যালিতেও ১১ হাজার কোটির বিনিয়োগ হয়েছে। ৫ বছরে ১০ লক্ষ স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী তৈরি করবে রাজ্য সরকার। যা কর্মসংস্থান তৈরিতে সহায়ক হবে। ”

এছাড়াও সার্বিকভাবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ছাড়াও রোড ট্যাক্স এবং অ্যাডিশনাল ট্যাক্স আগামী ১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত মুকুব করা হচ্ছে। স্টাম্প ডিউটিতে ২% ছাড় দেওয়া হচ্ছে।

পাশাপাশি স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের উপর জোর দেন তিনি। কেন্দ্রকে বিঁধতে যথারীতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতিয়ার ছিল পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়লে হেঁসেলে প্রভাব পড়ে। ওরা আয় করে এই থেকে। ৩ লক্ষ ৭১ হাজার কোটি টাকা ইনকাম করেছে ওরা। কোথায় গেল এত টাকা? এত দাম বাড়লে মানুষের চলবে কি করে?”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*