বিশেষ প্রতিনিধিঃ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার পুরুলিয়ায় সামাথ এগ্রোটেক নামে একটি কারখানার শিলান্যাস করলেন। এই কারখানায় ফার্টিলাইসার আর সিমেন্টের পলিব্যাগ তৈরী হবে এবং এই কারখানায় ১০০০ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে পর্যটনকে বিশেষভাবে গ্রুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। উপস্থিত ছিল কন্যাশ্রী মেয়েরা এবং সবুজ সাথীর ছেলে-মেয়েরা। এদের দেখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছোট ছেলেমেয়ে দেশের ভবিষ্যৎ। উনি বলেন, কুরমারি, অলচিকি, কুরুক, হিন্দি, নেপালী ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে আমাদের সরকার। তাছাড়াও কুরমি সম্প্রদায়কে নিয়ে একটা কুরমির কালচারাল ডেভেলপমেন্ট বোর্ড তৈরী করা হয়েছে। এই খাতে ১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। মাহাতোদের কুরমির ভাষায় উন্নয়ন নিয়ে এই বোর্ড কাজ করবে। এছাড়া গভর্মেন্ট অফ ইন্ডিয়াকে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দিয়েছে মাহাতো কুরমির ভাষাকে সরকারী স্বীকৃতি দেওয়া হোক।
এছাড়াও মালটিসুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল দুটো হয়েছে। মেডিকেল কলেজ হচ্ছে। মাতৃজাল, নিশ্চয়জাল ইত্যাদি নিয়ে এই জেলায় প্রভৃতি উন্নতির কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, জমিতে যারা কাজ করেন তাদের জন্য সুখবর। কৃষি জমিতে খাজনা দিতে হবে না। সবকিছু মুকুব করা হলো। পুরুলিয়ায় জলের সমস্যা নিয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জাপানের সংস্থা জাইকা এখানে প্রকল্প করছে, কিন্তু ওদের করতে দেরি হচ্ছে। তাই রাজ্য সরকারের সরকারী প্রকল্পের বাঁচানো টাকার ২৫% রাস্তা, জলের জন্য দেওয়া হবে। পুরুলিয়ায় জলের সমস্যা সমাধান হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গরীব মানুষ, সাধারণ মানুষ আমাদের সম্পদ। আমরা প্রথম জঙ্গলমহলে মানুষের জন্য ২টাকা কেজি চালের ব্যবস্থা করেছিলাম। এখন খাদ্যসূচী প্রকল্পে দু’টাকা কেজি দরে চাল-গম দেওয়ার ফলে ৯০-১০০ টাকা সাবসিডি দিতে হয় পরিবার পিছু একজনের জন্য। সুতরাং পুরো পরিবারের জন্য কত টাকা দিতে হয় সেটা আপনারা ভেবে দেখুন। তা সত্ত্বেও তৃণমূল কংগ্রেসের মা-মাটি-মানুষের সরকার উন্নয়নের কাজ চালিয়ে যাবে। AECC প্রকল্পে কেউ যেন বঞ্চিত না হয় সে বিষয়ে নজর রাখতে বলেন। ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে চেক ড্যাম তৈরী করা হবে জল যাতে ধরে রাখা যায়।
রঘুনাথপুরকে Industrial Area হিসাবে আরও জোর দেওয়া হবে। ঝালদা পুরসভায় কোনও অসুবিধা হলে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সাথে কথা বলবেন, মঞ্চ থেকে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো এ ব্যাপারে কথা বলবেন। এই এলাকায় অনেকেই রিসর্ট তৈরী করেছেন। আপনারা আরো অনেক বেশী উদ্যোগী হন। শিল্প করুন, এখানে খনিজ দ্রব্য আছে। এই সময় মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, উত্তর-দক্ষিণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোরিডর তৈরী করছি আমরা। ইকো-ট্যুরিজম প্রকল্প তৈরী হয়েছে পুরুলিয়ার সন্নিহিত অঞ্চলে। বলেন, পুরুলিয়া ঘুরে দাঁড়াক। এখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা মাথা উঁচু করে বিশ্বজয় করুক। পুরুলিয়া, ঝালদা, মানবাজার প্রভৃতি এলাকার ছেলে-মেয়েরা অবহেলিত নয়। এদের মানুষ করুন। সবাই আমাদের ঘরের ভাই-বোন। Self-Help Group থেকে ঠিকমত ব্যাঙ্ক লোন পায় সে ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট মানুষজনকে উদ্যোগী হতে বলেন। এক্ষেত্রে মেয়েরা ভালো কাজ করছে। মেয়েরা আমাদের সম্পদ। পুরুলিয়ার ছৌ হলো এক নম্বর। আগামীদিনে এখানে অনেক এয়ারপোর্ট হবে। অনেক নতুন কারখানা হবে। আমেরিকা, জাপান, রাশিয়া যাবে পুরুলিয়ার ছেলে-মেয়েরা। পুরুলিয়া হলো রূপসি বাংলা।
Be the first to comment