দুদিন ধরে ২২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ। তাতেও রেহাই নেই। বুধবারও দিল্লির ইডি দফতরে ন্যাশনাল হেরাল্ড বিতর্কে আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাহুল গান্ধীর। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে রাহুলকে হেনস্তা করছে বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। প্রতিবাদে গত তিনদিন ধরেই উত্তাল তামাম দিল্লি। এরই মধ্যে বুধবার দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরে হামলা চালায় দিল্লি পুলিস। দরজা ভেঙে ভিতরে থাকা দলের নেতা কর্মীদের পুলিস মারধর করে বলে অভিযোগ।
কংগ্রেসের দাবি, ইংরেজ শাসকও পরাধীন ভারতে কখনও কংগ্রেসের সদর দফতরে পুলিস ঢোকায়নি। কিন্তু বুধবার বিজেপির হাতের পুতুল দিল্লি পুলিস কংগ্রেস দফতরে ঢুকে মারধর করল। পুলিসের অবশ্য দাবি, তারা কংগ্রেস দফতরে ঢোকেনি। কংগ্রেস নেতৃত্ব এই ঘটনাকে গণতন্ত্রের লজ্জা বলে আখ্যা দিয়েছে। এর প্রতিবাদে আগামিকাল বৃহস্পতিবার দেশের সব রাজ্যে রাজভবন ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। বুধবার বিকেলে দলের সমস্ত প্রদেশ কমিটিকে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে বলা হয়েছে। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব বলেন, এটা হল ২০২২ এর জরুরি অবস্থা। এরপর যেন আর কখনও নরেন্দ্র মোদি জরুরি অবস্থার উল্লেখ না করেন।
এদিনও কংগ্রসের দফতর থেকেই রাহুল গান্ধী ইডি দফতরে যান। সঙ্গে ছিলেন বোন প্রিয়াঙ্কা। দলীয় কর্মীরাও তাদের সঙ্গে পা মেলান। পুলিস আটকাতে গেলে কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল টুইটে লেখেন, আজ দিল্লির পুলিস দেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সদর দফতরের জোর করে ঢুকে পড়ে। তারা আজ গণতন্ত্রকে হত্যা করল। যে গণতন্ত্রের জন্য আমাদের পূর্বপুরুষরা লড়াই করেছেন এবং জীবন বলিদান দিয়েছেন। এর থেকে কালো দিন আর কিছু হতে পারে না।
দলের জাতীয় মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, দিল্লি পুলিস বিজেপির দলদাস এবং কাঠপুতুল হয়ে পড়েছে। তারা নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের অঙ্গুলিহেলন ছাড়া চলতেই পারে না। রাহুল গান্ধী দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইস্যুতে মোদি সরকারের মুখোশ খুলে দিচ্ছেন বলেই তাঁর উপর বিজেপি নেতৃত্বের এত রাগ। তার জন্যই ইডি সিবিআইকে ব্যবহার করে রাহুল গান্ধীকে হেনস্তা করা হচ্ছে। সুরজেওয়ালা বলেন, এসব করে রাহুল গান্ধীর এবং কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মুখ বন্ধ করা যাবে না।
গত দুদিনের মতো বুধবারও দিল্লি রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। দলে দলে কংগ্রেসের নেতা-মন্ত্রীরা বিজেপি এবং দিল্লি পুলিসের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে রাস্তায় নামেন। পুলিসের সঙ্গে দফায় দফায় কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়। অনেক প্রবীণ নেতা পুলিসের হাতে মার খান। বহু নেতা-কর্মীকে দিল্লির বিভিন্ন থানায় আটকে রাখা হয়। সুরজেওয়ালা জানিয়েছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের আন্দোলন জারি থাকবে।
দিল্লি পুলিসের স্পেশাল সিপি ডিপি হুডা জানান, এআইসিসি অফিসের সামনে প্রচুর লোক পুলিসকে লক্ষ্য করে ব্যারিকেড ছোড়ে। তাকে কেন্দ্র বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি। তবে পুলিস কংগ্রেস দফতরের ভিতরে ঢোকেনি এবং লাঠি চালায়নি। পুলিস কোনও বলপ্রয়োগও করেনি। বরং কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের পুলিসের সঙ্গে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছিল। সুরজেওয়ালার দাবি, পুলিস ডাহা মিথ্যা কথা বলছে।
Be the first to comment