এবার কি সংসদেও বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ শুরু হল? সংসদে কী কী শব্দ ব্যবহার করা যাবে না, তা জানিয়ে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেছে লোকসভার সচিবালয়। তাতে বহু প্রচলিত শব্দ ব্যবহারেও লাগাম পড়ানো হয়েছে। এমমকী বলা যাবে না, মিথ্যা বা অসত্যের মতো শব্দও। এতেই বিরোধীরা বলছেন, সংসদে তো জরুরি অবস্থা জারি হতে চলেছে। বিরোধী নেতারা এর তীব্র নিন্দা করেছেন। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন, কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ প্রমুখ টুইট করে সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন।
১৮ জুলাই থেকে সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন শুরু হচ্ছে। তার আগে বুধবার এই নীতি-পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন শব্দকে অসংসদীয় বলা হয়েছে। যেমন বলা যাবে না জুমলাজীবী, বালবুদ্ধি, কোভিড স্প্রেডার, স্নুপগেটের মতো শব্দ। ব্যবহার করা যাবে না লজ্জিত বা লজ্জাজনক, নাটক, দুর্নীতি, বিশ্বাসঘাতক, অযোগ্য ইত্যাদি শব্দ। বাংলা, ইংরেজি বা হিন্দিতে অ্যানার্কিস্ট বা সন্ত্রাসবাদী, শকুনি, ডিক্টেটরিয়াল বা স্বৈরাচারী, তানাশাহি, জয়চাঁদ, বিনাশ পুরুষ, খালিস্তানি, নিকম্মা, নৌটঙ্কি, ব্লাডি, চামচাগিরি, শিশুসুলভ, ভীতু, কুম্ভীরাশ্রু, আই ওয়াশ, চেলা ইত্যাদিও।
লোকসভা, রাজ্যসভা এবং রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে সব দলের সদস্য এবং মন্ত্রীরাও এই সব শব্দ হামেশাই ব্যবহার করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তাঁর দল বিকাশ পুরুষ বলে সংসদে বারবার মর্যাদা দেন। তার জবাবে বিরোধীরা তাঁকে বিনাশ পুরুষ বলে কটাক্ষ করেন। প্রশ্ন উঠেছে, প্রধানমন্ত্রীকে সমস্ত বিতর্কের উপরে স্থান দেওয়ার জন্যই কি এই অভিনব উদ্যোগ?
পুস্তিকায় যে সব শব্দ ব্যবহার করা যাবে না বলে ফতোয়া জারি হয়েছে কিংবা যে সব শব্দকে অসংসদীয় বলা হয়েছে, সেগুলি কতটা যুক্তিপূর্ণ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, তাঁদের কণ্ঠরোধ করার জন্যই এই নতুন ব্যবস্থা।
কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ টুইটে লেখেন, মোদি সরকারের বাস্তব অবস্থা তুলে ধরার জন্য বিরোধীরা যে শব্দাবলি সাধারণত ব্যবহা করেন, সেগুলিকেই অসংসদীয় বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, এর পর কি হবে বিশ্বগুরু?
Be the first to comment