কাশীপুর রহস্যমৃত্যু কাণ্ডে ধূসর গাড়ির পর্দাফাঁস, এখনও জিজ্ঞাসাবাদে রাজি নয় পরিবার

Spread the love

কাশীপুরে বিজেপি নেতার মৃত্যুর ঘটনায় ধূসর গাড়ির রহস্য ফাঁস। রবিবার বিভিন্ন মহল থেকে দাবি তোলা হয় যে, গত বৃহস্পতিবার অর্জুন চৌরাসিয়ার মৃত্যুর রাতে ওই গাড়ি করেই ‘আততায়ী’রা আসে। কিন্তু বিভিন্ন মহল তথা অর্জুনের পরিবারের ওই দাবি যে সম্পূর্ণ ভ্রান্ত, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তা প্রমাণ করল কলকাতা পুলিশ।

পুলিশের তদন্তে প্রকাশ পেল যে, গাড়ির চালক এক আত্মীয়ের বাড়িতে আসেন। সেই কারণে চৌরাসিয়াদের বাড়ির কাছে গাড়িটি পার্ক করে রেখেছিলেন। পুলিশের দাবি, ওই গাড়ির সন্ধান মিলেছে। সোমবার উত্তর কলকাতার চিৎপুর থানায় ডেকে ওই গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এমনকী, ঘোষবাগানের অদূরে ওই আত্মীয়ের বাড়িতেও পুলিশ গিয়ে বিষয়টি যাচাই করে আসে। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, অর্জুন চৌরাসিয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের সঙ্গে এই ‘রহস্যময়’ গাড়িটির কোনও সম্পর্ক যে নেই, তা প্রমাণিত। একইসঙ্গে গত বৃহস্পতিবার রাতে কাশীপুর রেল কলোনির পরিত্যক্ত ঘরের ভিতর যে অর্জুন আত্মঘাতী হয়েছেন, সেই ইঙ্গিত আরও স্পষ্ট হয়েছে পুলিশের কাছে। যদিও পুলিশ ও চৌরাসিয়া পরিবার ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে। আলিপুরে সেনাবাহিনীর কম্যান্ড হাসপাতাল থেকে ওই রিপোর্ট মঙ্গলবার হাই কোর্টে জমা পড়ার সম্ভাবনা।

গত শুক্রবার সকালে রেল কলোনির পরিত্যক্ত ঘর থেকে চিৎপুরের ঘোষবাগানের যুবক অর্জুন চৌরাসিয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের লোকেদের দাবি, তাঁকে খুন করা হয়েছে। তারই সপক্ষে অর্জুনের মা লছমি চৌরাসিয়া দাবি করেন, বৃহস্পতিবার রাতে তিনি চার বা পাঁচজনের গলার আওয়াজ শুনেছিলেন। তারা বলেছিল, “খুন করে দেব, কেউ খুঁজেও পাবে না।” এই মৃত্যুর ঘটনার জন্য তৈরি হওয়া লালবাজারের (Lal Bazar) বিশেষ অনুসন্ধানকারী দল বা ‘সিট’-এর সদস্যরা এদিন বিকেলে চৌরাসিয়াদের বাড়িতে যায়। অর্জুনের মা ও দাদাকে নোটিস দেওয়া হয়, তাঁদের দাবি ও অভিযোগগুলি পুলিশকে জানালে ‘সেট’ বিষয়গুলি নিয়ে তদন্ত করবে। তাঁদের সুবিধামতো জায়গায় গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়। যদিও এতে সাড়া না দিয়ে পরিবারের লোকেরা জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত দশটা নাগাদ ঘোষবাগানে চৌরাসিয়াদের বাড়ির কাছে ধূসর গাড়িটি এসে দাঁড়ায়। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, একজন গাড়ি থেকে নেমে বনেট খুলে ফের বন্ধ করলেন। ওই গাড়িতে অন্য কাউকে দেখা যায়নি। ভোর চারটে নাগাদ গাড়িটি বেরিয়ে যায়। পুলিশ সিসিটিভির ফুটেজে নম্বরপ্লেটের সূত্র ধরে গাড়িটি শনাক্ত করে। পুলিশের ডাকে গাড়ি নিয়ে চিৎপুর থানায় এসে হাজির হন গাড়ির চালক। তিনি জানান, ঘোষবাগানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে এসে বৃহস্পতিবার রাতে ছিলেন। গাড়িটি কোথায় পার্ক করবেন, বুঝতে না পেরে ওই জায়গায় করেন। এর পরের দিন শুক্রবার ভোরে উত্তর কলকাতায় একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে গিয়ে সারাদিন ছিলেন। এর পর গাড়ি নিয়ে অন্য একটি জায়গায় যান। তাই রবিবার বাড়িতে গিয়ে পুলিশ তাঁকে পায়নি। এদিন নিজেই এসে হাজির হন থানায়। যে আত্মীয়ের বাড়িতে রাতে ছিলেন, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ নিশ্চিত হয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*