হিন্দুত্ব নিয়ে কথা বলবে কে? নির্বাচনী জনসভায় গলা উঁচিয়ে সে কথা জানিয়েছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজস্থানের কংগ্রেস নেতা সি পি যোশী। বিতর্কিত সেই বক্তব্যে মরুরাজ্যের রাজনীতি তোলপাড় হতেই নির্বাচন কমিশন নোটিস পাঠাল কংগ্রেসের এই বর্ষীয়ান নেতাকে। রাজস্থানে চাপে থাকা বিজেপিও যোশীর বক্তব্য নিয়ে তীব্র সুর চড়িয়েছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।
আগামী ৭ ডিসেম্বর রাজস্থানের ভোট। নাথদ্বারা কেন্দ্রে কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়েছেন যোশী। গত রবিবার নিজের কেন্দ্রের একটি সভায় হিন্দুত্ব ইস্যুতে বিজেপিকে বিঁধতে গিয়ে ‘বেফাঁস’ মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, “ব্রাহ্মণরা ছাড়া হিন্দুত্ব নিয়ে আর কারও কথা বলা উচিত নয়। তাঁদেরই একমাত্র এ ব্যাপারে সম্যক জ্ঞান রয়েছে।” কংগ্রেস নেতার এই বক্তব্যের ক্লিপিং দায়িত্ব নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেয় বিজেপি।
ওই ক্লিপিং-এ যোশীকে এ-ও বলতে শোনা গিয়েছে, “উমা ভারতী একজন লোধি। তিনিও হিন্দুত্ব নিয়ে কথা বলছেন! মোদীও হিন্দু ধর্ম নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন!” বিজেপি-র অভিযোগ, ভোট প্রচারে সরাসরি জাতপাত নিয়ে ঘৃণা ছড়াচ্ছে কংগ্রেস। পরিস্থিতি এমন জায়গায় যায় যে, আসরে নামতে হয় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে। টুইট করে রাহুল সি পি যোশীকে ক্ষমা চাইতেও বলেন। সেই সঙ্গে রাহুল টুইটে জানান, বর্ষীয়ান এই নেতার মন্তব্য কংগ্রেসের মতাদর্শের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কোনও দলীয় নেতার সমাজের কোনও অংশের নাগরিককে আঘাত করতে পারেন না বলেও লেখেন রাহুল।
কিন্তু বিজেপিও এত সহজে ব্যাপারটাকে ছাড়তে রাজি নয়। এমনিতেই বসুন্ধরা রাজের সরকার নিয়ে জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তা ভালই জানেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। তাই হাতে গরম এই রকম ইস্যু পেয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র তোপ দেগেছে বিজেপি। দলের অন্যতম মুখপাত্র সম্বিত পাত্র দাবি করেন, ক্ষমতা থাকলে কংগ্রেস সি পি যোশীকে সরিয়ে দিক।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, কংগ্রেসের সুবিধাজনক জায়গাকে কংগ্রেসের নেতারাই আলটপকা কথা বলে নড়বড়ে করে দিচ্ছেন। কয়েক সপ্তাহ আগে কংগ্রেস নেতা কমল নাথের বক্তব্যও বিতর্ক তৈরি করেছিল। কিন্তু যোশীর ঘটনায় কৈফিয়ৎ চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। এখন দেখার যোশী কী উত্তর দেন কমিশনকে। কমিশন কোনও ব্যবস্থা নেবে কি না সেদিকেও চোখ থাকবে রাজনৈতিক মহলের।
Be the first to comment