যশবন্তের বিরুদ্ধে কথা নয়, বঙ্গ সিপিএমকে কড়া নির্দেশ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের

Spread the love

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের সর্বসন্মত প্রার্থী তৃণমূলের যশবন্ত সিনহার বিরুদ্ধে আলিমুদ্দিনকে ‘মুখে কুলপ’ দিতে বলল সিপিএম কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বাম-কংগ্রেস, আরজেডি-সহ সমস্ত বিরোধী দলই সর্বভারতীয় তৃণমূলের সহ-সভাপতি যশবন্ত সিনহাকে সমর্থন করায় বাড়তি সতর্ক সিপিএম শীর্ষনেতৃত্ব। বিশেষ করে বঙ্গ সিপিএমের তরফ থেকে বিরোধীদের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে নিয়ে যাতে কোনও বিরূপ মন্তব্য করা না হয় সেজন্য মঙ্গলবারই আলিমুদ্দিনে বার্তা পাঠিয়েছে রাজধানীর এ কে গোপালন ভবন।

জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘সাম্প্রদায়িক বিজেপি’কে রুখতে দিল্লি থেকে গেরুয়া পতাকা মুছে দেওয়ার টার্গেট নিয়ে যেহেতু সব বিরোধী দলগুলি ঐকমত্যে পৌঁছেছে তখন যেন পার্টির পশ্চিমবঙ্গ শাখা রাষ্ট্রপতি প্রার্থী নিয়ে ভিন্ন পথে না হাঁটে। কারণ, রাষ্ট্রপতি প্রার্থী চূড়ান্ত করা নিয়ে মমতা যখন প্রথম বৈঠকটি ডেকেছিলেন তখন সেখানে কেন্দ্রীয় সিপিএমের তরফে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকার নিয়ে পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছিল আলিমুদ্দিন। বিষয়টি নিয়ে এদিন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া ছিল স্পষ্ট। তাঁর কথায়, “বিষয়টি পুরোপুরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত। এই নিয়ে আমাদের কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়।”

দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে গত ১৬ জুন অ-বিজেপি দলগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেন মমতা। সেখানে ছিল দুই বামপন্থী দল সিপিএম ও সিপিআই। মমতাকে চিঠি দিয়ে বৈঠকে থাকার কথা আগাম জানান ইয়েচুরি। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয় আলিমুদ্দিন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পশ্চিমবঙ্গের নেতাদের সঙ্গে কথা না বলায় ইয়েচুরির বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেন আলিমুদ্দিনের কর্তারা। যদিও সেদিন ইয়েচুরি কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ও রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই রাজ্যসভায় পার্টির নেতা এলমারাম করিমকে প্রতিনিধি হিসাবে মমতার ডাকা বৈঠকে পাঠিয়েছিলেন সীতারাম।

আর এদিন সংসদের অ্যানেক্স ভবনে কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গে, জয়রাম রমেশের সঙ্গে ছিলেন ইয়েচুরি স্বয়ং। অবশ্য বামেরা যশবন্তকে সমর্থন করায় একটি যুতসই যুক্তি খুঁজে পেয়েছে সিপিএম কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সিপিএম সূত্রে খবর, ইয়েচুরিরা মনে করছেন, যশবন্ত সিনহা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহসভাপতির পদ ছাড়ায় তাঁকে সমর্থনের ক্ষেত্রে পার্টিগত কোনও অসুবিধা রইল না। পার্টির বঙ্গ শাখাও যাতে প্রশ্ন তুলতে না পারে তাই সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজাকে আগেই শরদ পাওয়ারের কাছে পাঠিয়ে দেন ইয়েচুরি। যাতে যশবন্ত সিনহা তৃণমূলের দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

কার্যত এমনই কৌশল নিয়েই বাংলার সিপিএম নেতৃত্বের মুখ ইয়েচুরি বন্ধ করলেন বলে দাবি। সিপিএম শীর্ষনেতৃত্ব আলিমুদ্দিনকে বলা হয়েছে, নির্দল প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে সমর্থন করছে পার্টি। তবু প্রাক্তন তৃণমূলী যশবন্তর বিরুদ্ধে কিছু বিরূপ মন্তব্য করা যাবে না। আর যেহেতু এই বৈঠক স্বয়ং শরদ পাওয়ার ডেকেছিলেন তাই আলিমুদ্দিনের কিছু বলারও থাকছে না। তাই যশবন্তকে সমর্থন নিয়ে আগামী কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আলিমুদ্দিনকে জবাব দেওয়ার মোক্ষম অস্ত্রও সীতারাম ইয়েচুরি করে রেখেছেন বলে মনে করছে বঙ্গ সিপিএম নেতারা।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*