বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে তৈরি হবে সাইকেল হাব, ঘোষণা মমতার

Spread the love

দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সাইকেল ব্যবহার করেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। পরিসংখ্যানের বিচারে তা প্রায় ৮০ শতাংশ (৭৮.৯ শতাংশ)। সম্প্রতি ন্যাশনাল ফ্যামিলি অ্যান্ড হেলথ সার্ভেতে উঠে এসেছে এই তথ্য। ২০১৯ থেকে ২১ সালের মধ্যে কেন্দ্রের তরফে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। সেই সমীক্ষাতেই এই তথ্য সামনে আসে।

দেখা গিয়েছে, এ রাজ্যের বাসিন্দাদের মধ্যেই নিয়মিত সাইকেল ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। পরিসংখ্যানের বিচারে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, রাজস্থান কিংবা মহারাষ্ট্রকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে বাংলা। আর এবার খড়্গপুরেই সাইকেল হাব তৈরি করার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মঙ্গলবার একথা ঘোষণা করে তিনি। তার জন্য ২০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানানো হয়েছে। আর এই হাব তৈরি হলে রাজ্যে প্রচুর কর্মসংস্থানও হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে সাইকেল হাব প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সবুজ সাথী প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা বছরে ১০ লাখ করে সাইকেল দিই পড়ুয়াদের। কিন্তু, সেই সাইকেলের পার্টস আমাদের বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয়। এমনকী, সাইকেলও নিয়ে আসতে হয় বাইরে থেকে। ফলে এখানে যদি সাইকেল ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করতে না পারি তাহলে সেই সাইকেল সারাবে কে?”

এরপরই সেই বৈঠকে উপস্থিত পাঁচজন শিল্পপতির সঙ্গে মমতাকে পরিচয় করিয়ে দেন মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। তিনি বলেন, “সবুজ সাথীর মাধ্যমে প্রতি বছর ১০ থেকে ১১ লাখ সাইকেল স্কুলের পড়ুয়াদের দেওয়া হয়। এর জন্য প্রতিবছর ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়। আর এই সাইকেলগুলি কেনার জন্য আমাদের টাকাই চলে যেত বাইরে। এবার সেই সাইকেল তৈরির কারখানা তৈরি হবে মেদিনীপুরেই। বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে এর জন্য জায়গা দেওয়া হচ্ছে।”

উল্লেখ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, মেয়েদের স্কুলমুখী করতে, এবং ড্রপআউট রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ উদ্যোগ ছিল, ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে সাইকেল দেওয়া হয়। ২০১৫ সালে রাজ্যে জঙ্গলমহলের ছাত্রীদের মধ্যে সাইকেল বিলি দিয়ে শুরু হয় ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্প। পরবর্তীকালে ছাত্র-ছাত্রী নির্বিশেষে রাজ্য জুড়ে লাখ লাখ সাইকেল বিলি করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। আর এই প্রকল্প রাষ্ট্রসংঘের থেকে বিশেষ পুরস্কারও আদায় করে নিয়েছে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই ‘হুইলস ফর চেঞ্জ’ পুরস্কার অর্জন করে এই প্রকল্প। ফলে রাজ্যজুড়ে সাইকেল ব্যবহার পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকটাই বেড়েছে, তা বলা বাহুল্য। আর এবার খড়্গপুরেই সাইকেল হাব তৈরির কথা ঘোষণা করলেন মমতা।

অন্যদিকে বুধবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠে বুথস্তরীয় কর্মিসভায় যোগ দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে সার্কিট হাউস থেকে কলেজ মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন তিনি। এরপর বেলা ১২ টায় কলেজ মাঠে কর্মিসভায় যোগ দেওয়ার কথা তাঁর। কর্মিসভা শেষে মেদিনীপুর কলেজ মাঠের অস্থায়ী হেলিপ্যাড গ্রাউন্ড থেকে কপ্টারের ঝাড়গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*