রাজধানী দিল্লির বিধ্বংসী আগুনে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২৭ জন। গুরুতর আহত হয়েছেন ১২ জন। ইতিমধ্যেই এই অগ্নিকাণ্ডের কারণ হদিশ করতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সেই সঙ্গে তিনি মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য়ের ঘোষণা করেছেন। আহতদের দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা করে।
ঠিক কী হয়েছিল? জানা যাচ্ছে, শুক্রবার বিকেল পৌনে পাঁচটা নাগাদ দিল্লির মুন্ডকা মেট্রো স্টেশনের কাছে চারতলা এক বিল্ডিংয়ে আগুন লাগায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ, দমকল বাহিনী। ৩০টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় ৭ ঘণ্টারও বেশি সময় পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ততক্ষণে চলে গিয়েছে বহু প্রাণ।
জানা গিয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে কাজের জন্য অন্তত ১২০ জন উপস্থিত ছিলেন। এর দোতলায় ছিল একটি সিসিটিভি ক্যামেরা এবং রাউটার সারাইয়ের কোম্পানি। তৃতীয় তলে মোটিভেশনাল স্পিচের একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হচ্ছিল। সেখানে অনেকেই অংশ নিয়েছিলেন। ফলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিলতলাতে প্রাণহানির ঘটনা বেশি ঘটেছে।
এদিন সকালে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। এরপরই তিনি আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ২৯ জন নিখোঁজ। কেন ঘটল ওই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড? দিল্লি দমকল দপ্তরের মুখ্য অফিসার অতুল গর্গ জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইনে বিস্ফোরণ ঘটার ফলেই ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই সঙ্গে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। আরও কেউ বিল্ডিংয়ের মধ্যে আটকে রয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। NDRF-এর তরফে বিকাশ সাইনি জানান, “দোতলায় কিছু দেহাংশের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। আগামী ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা গোটা বিল্ডিং তল্লাশি করা হবে। আমরা নিশ্চিত করব, যাতে কেউ ভিতরে আটকে না থাকে।”
বিধ্বংসী আগুনে কালো হয়ে যাওয়া বিল্ডিংয়ের সামনে ভিড় জমিয়েছেন আহতদের পরিবারের সদস্যরা। ইসমাইল নামের এক ব্যক্তি জানাচ্ছেন, তিনি তাঁর বোনকে খুঁজতে এসেছেন। কিন্তু তাঁর হদিশ মিলছে না। সব মিলিয়ে ভয়ংকর, মর্মান্তিক পরিস্থিতির সাক্ষী রাজধানী।
এদিকে, গোটা ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্যরা।
মৃতদের পরিবারের জন্য ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যও ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। সেই সঙ্গে আহতদের পরিবার পিছু দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা।
Be the first to comment