কোচবিহারের দিনহাটায় বিজেপির মণ্ডল সভাপতি অমিত সরকারের মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল রাজ্যজুড়ে। ওই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি।
ঘটনার পরপরই তদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখতে শুক্রবার কোচবিহারে গিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। আর সমস্ত কিছু পর্যবেক্ষণ করে তিনি যে রিপোর্ট দিয়েছেন কমিশনে, তাতে বিজেপির বিড়ম্বনা কয়েকগুণ বেড়ে গেল। তাঁর রিপোর্ট অনুসারে, খুন নয়, আত্মহত্যা করেছেন অমিত সরকার।
কিন্তু কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন ওই বিজেপি নেতা? দুবের রিপোর্ট অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরেই অবসাদে ভুগছিলেন অমিত। সেই কারণে নিয়মিত ওষুধ খেতে হত তাঁকে। কিন্তু সম্প্রতি বিধানসভা ভোটে টিকিট না পেয়ে অবসাদ আরও বেড়ে যায় তাঁর। ওষুধ খাওয়াও বন্ধ করে দেন। আর সেই হতাশা থেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এক মহিলার সঙ্গে অমিতের সম্পর্কের উল্লেখও রয়েছে বিবেক দুবের রিপোর্টে। এদিকে ভোটের মুখে বিজেপির মণ্ডল সভাপতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। দিনহাটা শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অমিত বৃহস্পতিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
শুক্রবার সকালে দিনহাটা থানার পুলিশ তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। ঘটনার প্রতিবাদে দিনহাটা শহরে রাস্তা অবরোধ করেছিলেন বিজেপি কর্মীরা। দিনহাটা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ঘটনাস্থলে এসে অভিযোগ করেন, ‘ তৃণমূলের এই খুনের রাজনীতির ধিক্কার জানাই।’ অভিযুক্তদের কঠোর সাজার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
এরপরই দিনহাটা যান বিবেক দুবে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের থেকে এই ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছিলেন বিবেক দুবে। এমনকী অমিত সরকারের পকেট থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছিল। হ্যান্ড রাইটার এক্সপার্টটে দিয়েও সেই সুইসাইড নোট পরীক্ষা করার কথা জানিয়েছিলেন দুবে। সমস্ত তথ্য হাতে আসার পরই কমিশনে রিপোর্ট জমা দিলেন বিবেক দুবে। আর তাতে বিজেপির অভিযোগ সম্পূর্ণ খারিজ হয়ে গেল।
যদিও দিনহাটার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী উদয়ন গুহ বলেছিলেন, ‘পুলিশ তদন্ত করলে সব স্পষ্ট হবে। তৃণমূল এই ঘটনার সাথে জড়িত নয়।’ বাস্তবেও তাই হল।
Be the first to comment