টালিগঞ্জ, বেলঘরিয়ার পর অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে বৃহস্পতিবার হানা দিলো ইডির তদন্তকারীদের একটি দল৷ সেই ফ্ল্যাট থেকেও গুপ্তধনের সন্ধান মেলে কি না তা জানতে উৎসুক ছিল রাজ্যবাসী৷ যদিও চিনার পার্কের রয়্যাল রেসিডেন্সি আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে এদিন কিছুই পায়নি ইডি৷ বৃহস্পতিবার তালা খুলে ফ্ল্যাটের ভিতরে প্রবেশ করে খানিকটা অবাকই হন ইডির আধিকারিকরা৷ ফ্ল্যাটের কাজ এখনও সম্পূর্ণই হয়নি৷ স্বাভাবিকভাবে তল্লাশির করে মেলেনি কিছুই৷ খালি হাতে ফিরে আসতে হয় ইডির আধিকারিকদের৷
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তে নেমে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতার নামে কলকাতা, শহরতলি এবং আশেপাশের জেলাতে প্রচুর সম্পত্তির খোঁজ পায় ইডি৷ তারই একটি চিনার পার্কের রয়্যাল রেসিডেন্সি৷
চিনার পার্ক থেকে এগিয়ে নোয়াপাড়া পূর্বাপাড়ার ওই আবাসনের বি ব্লকের চার তলায় রয়েছে অর্পিতার ফ্ল্যাটটি৷ সূত্রের খবর, এর আগে জেরায় তদন্তকারীদের কাছে অর্পিতা দাবি করেছিলেন, তাঁর ফ্ল্যাটগুলিকে ‘মিনি ব্যাঙ্ক’ হিসাবে ব্যবহার করা হয়৷ ইতিমধ্যে টালিগঞ্জের ডায়মন্ড সিটি এবং বেলঘরিয়ার রথতলার অভিজাত দুই আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি নগদ টাকা, বিপুল পরিমাণ সোনা, বিদেশি মুদ্রা এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করে ইডি৷ ফের অর্পিতার নামে আর একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান পেতেই বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযানে নামে ইডি৷ আর সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই নতুন করে শিহরিত হয়ে পড়ে বাঙালি৷ তবে কি এই ফ্ল্যাটেও মিলবে গুপ্তধন? উত্তরের অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা৷
আজ সকাল থেকে ধাপে ধাপে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে৷ ইডি সূত্রে খবর বুধবার রাতে বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে যে বিশাল টাকা উদ্ধার হয়েছে সেই খবর পাওয়ার পর থেকেই অর্পিতা এবং পার্থর কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। বুধবার রাতে কেউই ঘুমোতে পারেননি৷ বৃহস্পতিবার সকালে জলখাবার খাওয়ার পর প্রথম দফায় অর্পিতাকে নিয়ে বসেন তদন্তকারী অফিসাররা৷ বেশ কয়েক ঘন্টা জেরার পর অর্পিতা মুখোপাধ্যায় কান্নায় ভেঙে পড়েন৷ তখন তিনি অফিসারদের বলেন, এই টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের৷ তিনি আমায় টাকা রেখে দিতে বলতেন৷ পাশাপাশি জেরায় বেশ কিছু লোকের কথাও তদন্তকারীদের জানান অর্পিতা৷
অন্যদিকে অর্পিতার বয়ানের কথা শুনে জেরার সময় মেজাজ হারান পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ সদ্য তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া পার্থের দাবি, অর্পিতা তাঁর কাছে সাহায্য নিতে এসেছিলেন৷ তিনি তাঁকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করেছিলেন৷ পার্থের অভিযোগ, তাঁর নাম ব্যবহার করে বাজার থেকে মোটা টাকা তোলা হয়েছে৷ সেই সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে ইডি সূত্রে দাবি৷
Be the first to comment