নাছোড় কৃষক আন্দোলনের চাপে শুক্রবারই নয়া তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৷ কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে মহারাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতায় থাকা প্রধান দুই রাজনৈতিক দল শিবসেনা এবং এনসিপি ৷
শুক্রবার গুরু নানকের জন্মজয়ন্তী ৷ লক্ষ্যণীয়ভাবে এই দিনটিকেই কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার জন্য বেছে নেয় কেন্দ্র ৷ শুক্রবার সকালে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তখনই তিনি জানান, তাঁর সরকার নয়া তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ একইসঙ্গে, আন্দোলনরত কৃষকদেরও অবিলম্বে ঘরে ফেরার আবেদন জানান তিনি ৷
কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ প্রসঙ্গে শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেন, এই প্রথমবার মানুষের মনের কথা (মন কি বাত) প্রধানমন্ত্রীর মুখ দিয়ে বেরোল ৷ বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যেই আন্দোলনরত কৃষকদের খলিস্তানি এবং পাকিস্তানি বলেছিলেন ৷ কিন্তু, শেষ পর্যন্ত কৃষকদের চাপের সামনে কেন্দ্রকে মাথানত করতেই হল ৷ দিল্লির সীমানায় আন্দোলন চলাকালীন ৪০০-এরও বেশি কৃষকের মৃত্যু হয়েছে ৷ যদি আগেই মোদি আমাদের দাবি মানতেন, তাহলে অনেক প্রাণ বাঁচানো যেত ৷ কিন্তু সরকার প্রথম থেকেই গোঁয়ার্তুমি করে এসেছে ৷ কৃষকদের কোনও কথাই শুনতে চায়নি তারা ৷
কেন্দ্রের এদিনের ঘোষণার পর এনিয়ে একটি টুইট করেন এনসিপির প্রধান মুখপাত্র নবাব মালিক ৷ তিনি লেখেন, ঝুকতি হ্যায় দুনিয়া, ঝুকানে ওয়ালা চাহিয়ে ৷ (বিশ্ব মাথা নত করে ৷ মাথা নত করানোর মতো লোক চাই ৷ ) আমরা সমস্ত কৃষককে কুর্নিশ জানাচ্ছি ৷ তাঁদের মধ্যে অনেকেই নিজের জীবন দিয়েছেন ৷ তিনটি কৃষি আইনই বাতিল করা হয়েছে ৷
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সংসদে কৃষি আইন পাস করা হয় ৷ তাতে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করেন ২৭ সেপ্টেম্বর ৷ এরপরই প্রতিবাদ শুরু করেন কৃষকরা ৷ শেষমেশ ২৬ নভেম্বর থেকে দিল্লির সীমানায় ঘাঁটি গাড়েন তাঁরা ৷ শুরু হয় এক তথাকথিত অসম লড়াই ৷ হাজার প্রতিকূলতা মাথায় নিয়েই কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় থাকেন কৃষকরা ৷ বিজেপিবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই আন্দোলনকে সমর্থন জানায় ৷ সমর্থন মেলে দেশের নাগরিক সমাজেরও ৷ প্রায় এক বছরের মাথায় অবশেষে জয় ছিনিয়ে নিলেন দেশের অন্নদাতারা ৷
Be the first to comment