ফ্যাশন ডিজাইনারকে খুনের ঘটনায় জেলে যেতেই হলো রাহুল আনোয়ারকে; পড়ুন!

Spread the love
দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের মর্গের বাইরে দাঁড়িয়ে আরতি শর্মা। ফ্যাশন ডিজাইনার দিদি’র মৃতদেহ নেওয়ার জন্য। সেখানে দাঁড়িয়েই তিনি বিড়বিড় করছিলেন, ‘যে রাহুলকে দিদি জেল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এল সেই রাহুলই দিদিকে খুন করল।’
বুধবার রাতে দিল্লির বসন্ত কুঞ্জ এলাকায় খুন হন ফ্যাশন ডিজাইনার মালা লাখানি ও তাঁর পরিচারক বাহাদুর। পুলিশ সূত্রে খবর, মালার দর্জি রাহুল আনোয়ার, রাহুলের তুতো ভাই রহমত ও তার বন্ধু ওয়াসিম মিলিতভাবে এই খুন করে। রাত ১০.৩০ নাগাদ তারা মালার বাড়িতে ঢুকে। সেই সময় মালা বাড়ির পাশের ওয়ার্কশপে ছিলেন। সেখানেই একাধিকবার ছুড়ির আঘাতে খুন করা হয় তাঁকে। খুন করা হয় মালার পরিচারক বাহাদুরকেও।
খুনের পরে লুঠের উদ্দেশ্যে গোটা ঘর তারা তছনছ করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, খুন করার পর তারা বাড়ি ফিরে খুনের অস্ত্র লুকিয়ে ফেলে। তারপর জামা-কাপড় বদলে পাশের একটা মন্দিরে এসে বসে। তারপরই আনোয়ারের মনে ভয় ঢুকে যায়। পাকা খুনি না হওয়ায় মাথা ঠাণ্ডা না রাখতে পেরে কয়েক ঘণ্টা পর থানায় এসে নিজেরাই আত্মসমর্পন করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তাদের মুখে খবর পেয়েই পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে দুটি দেহ। আনোয়ারের কাছ থেকে ঠিকানা পেয়েই যোগাযোগ করা হয় মালার বোন আরতির সঙ্গে। পুলিশ সূত্রে খবর, রাহুলের অভিযোগ, তার বেতন ২০০০ থেকে কমিয়ে ৮০০ করে দিয়েছিলেন মালা। নিয়মিত সেই বেতনও পেত না সে। বারবার বলেও কোনও লাভ হয়নি। সেই রাগেই দুজনকে সঙ্গে নিয়ে সে মালাকে খুন করে বলে জবানবন্দি দিয়েছে রাহুল আনোয়ার।
কিন্তু রাহুলের এই যুক্তি মানতে রাজি নন মালার বোন আরতি। সফদরজং হাসপাতালের মর্গের বাইরে দাঁড়িয়ে আরতি জানান, ২০১৭ সালে রংপুরি পাহাড়ি এলাকায় এক নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে জেলে গেছিল রাহুল। তখন মালায় তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছিলেন। আর সেই মালাকেই এভাবে খুন করল রাহুল।
পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার আরতি জানিয়েছেন, তিনি জানতেন যে বেতন নিয়ে রাহুলের সঙ্গে মালার কিছু সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু সেই সমস্যা এত গুরুতর ছিল না। এমনকী মালাকে না জানিয়ে রাহুল তাঁর বুটিকেও কাজ চাইতে এসেছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। বাড়ির সবাই মালাকে বারণ করত একা এত লোককে বাড়িতে না রাখতে। রাহুলের ব্যাপারে আরতি সতর্ক করেছিলেন মালাকে। তখন মালা নাকি বলেছিলেন, রাহুল তাঁর বাচ্চার মতো।
সেই রাহুলই কীভাবে এত নৃশংস ভাবে মালাকে খুন করল তা ভেবে কুল পাচ্ছেন না আরতি। তিনি অভিযোগ করেছেন, রাহুল ভেবেছিল মালা বাড়িতে অনেক টাকাপয়সা রাখে। সেসব লুঠের উদ্দেশ্যেই খুন করা হয় মালাকে। বাহাদুর দেখে ফেলায় তাকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এত কিছুর পরেও শেষরক্ষা হলো না। যে মালা রাহুলকে জেল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছিলেন, তাঁকে খুনের অভিযোগেই জেলে যেতে হলো রাহুল আনোয়ারকে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*